হলুদ ট্যাক্সির ভাড়া ১৮ টাকা প্রতি কিমি, ওলা-উবের মালিকরা পান ন'টাকা প্রতি কিমি
জনপ্রিয় বললে কম বলা হবে, ওলা-উবের এখন মানুষের কাছে নেশার মতো
- Total Shares
ওলা-উবের কোম্পানিগুলো যে ধরণের বেআইনি ব্যবসা করে চলেছে এবং অপারেটরদের উপর যে পরিমাণ যথেচ্ছাচার করে চলেছে তাতে তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
আসলে তাদের যে সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে তেমন কোনও আইন নেই। আর অ্যাপ ক্যাবগুলো তারই সুযোগ নিয়ে চলেছে।
একটা হলুদ ট্যাক্সির ভাড়া কিলোমিটার পিছু ১৫ টাকা। ছেঁড়া সিট-লড়ঝড়ে দরজা-শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই। আর ওলা-উবেরের মতো ঝকঝকে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িতে মালিকের ভাগ্যে জোটে কিলোমিটার পিছু সাত থেকে ন'টাকা। বুঝতেই পারছেন সমস্যাটা ঠিক কোথায়। যাত্রীরা অবশ্য তার দ্বিগুণেরও বেশি ভাড়া গোনেন। সরকারের ঠিক করা অ্যাপ ক্যাবগুলোর বর্তমান ভাড়া হচ্ছে ১৮ টাকা ৭৫ পয়সা প্রতি কিলোমিটার।
এর পর তো বিভিন্ন খাতে সারচার্জ ধার্য রয়েছেই। যাত্রীরা যে ভাড়া দেন তার প্রতি ১০০ টাকায় ৯০ টাকা মতো চলে যাচ্ছে অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলোর পকেটে। মালিকের ভাগ্যে জোটে বাকি ১০ টাকা। মালিক যদি নিজে গাড়ি চালান তা হলে তবু আয় আছে। কিন্তু চালক রেখে চালালে কোনও লাভ নেই। বরং লোকসানের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
এই সমস্যা শুধু পশ্চিমবঙ্গে নয়, ভারত জুড়েই রয়েছে। দিল্লি-মুম্বাইতে তো মালিকরা লাগাতার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল। সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে আমরা এখানে ধর্মঘট করছি না। আপাতত প্রতিবাদ-স্বরূপ একটি বিরাট মিছিলের আয়োজন করা হচ্ছে।
নিয়ন্ত্রণের আইন নেই, সেই সুযোগই নিচ্ছে অ্যাপ ক্যাব সংস্থাগুলো [ছবি: ইন্ডিয়া টুডে]
পরিস্থিতি যা তাতে যে কোনও দিন আগুন জ্বলতে পারে, জ্বলা দরকারও। সংস্থাগুলো যা শুরু করেছে তাতে পরিস্থিতি বেশ জটিল হয়ে উঠছে ক্রমশ। ভাবতে পারেন চালকরা প্রতিবাদ ডাকলে অফিস পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়ে সমস্ত পরিষেবা অনলাইনে চালানো হচ্ছে। যাতে কেউ আধিকারিকদের টিকিটি ছুঁতে না পারে!
আমাদের এই লড়াইয়ে সরকার আমাদের পাশে আছে। কারণ এই সংস্থাগুলো সরকারের সিদ্ধান্তও আমল দিচ্ছে না। নির্দিষ্ট একটি দূরত্ব অতিক্রম করতে একদিন ২০০ টাকা নিলে পরের দিন ২৫০ টাকা চাইছে। আবার অন্য একদিন ৩৫০ টাকা হাঁকছে। আইন বলে তো দেশে একটা কিছু আছে!
আমাদের প্রতিবাদ থামবে না। কিন্তু প্রতিবাদের ভাষাটা সতর্কভাবে বেছে নিতে হবে। কারণ তা না হলে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়তে পারে। যা কোনও দিনও কাম্য নয়। আসলে এই পরিষেবা মানুষের মনে নেশার মতো চেপে বসেছে। রোজগার যায় থাকুক না কেন, ওলা-উবেরে চাপা এখন নেশার মতো হয়ে গিয়েছে।
কিন্তু নেশা করতে গিয়ে কেউ যেন বিপদে না পড়ে। কাউকে যেন বিপদে না পড়তে হয়। এই বিষয়গুলোও দেখা দরকার।
তাই আমাদের প্রতিবাদ, আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকবে। দরকার হলে সরকার নিজে যাতে এই ধরনের পরিষেবা দিতে পারে অথবা কোনও সংস্থা যাতে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে এই পরিষেবা দিতে পারে আমরা সেই ভাবনাও ভাবছি।

