কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ান আক্রমণের সঙ্গে সাম্বার ডিফেন্সের লড়াই
মনে হচ্ছে ফয়সালা ৯০ মিনিটেই হবে, শেষ হাসি হাসবেন নেইমাররা
- Total Shares
বিশ্বকাপের আগে ২৮টা ম্যাচে একটিও গোল হজম করেনি ব্রাজিল। এই বিশ্বকাপে চার ম্যাচে মাত্র একটি গোল খেয়েছে, গ্ৰুপ লিগের প্রথম ম্যাচে। একেবারে প্রথম শ্রেণীর অঙ্ক - শেষ ৩২টি ম্যাচে মাত্র একটি গোল হজম করেছে ব্রাজিল। এর থেকে পরিষ্কার এই দলের রক্ষণভাগ সংশয়াতীত ভাবে ভালো।
দলটির ফরওয়ার্ড লাইনে রয়েছেন গাব্রিয়েল জেসুস, নেইমার ও কুটিনহোর মতো বড় মাপের ফুটবলালররা। তার সঙ্গে আবার এই জমাট বাঁধা ডিফেন্স। নিঃসন্দেহে এই বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা দল তিতের হলুদ জার্সিধারীরা।
সবচেয়ে বড় কথা আর্জেন্তিনা বা পর্তুগালের মতো ব্রাজিল দল কোনও মতেই 'ওয়ান ম্যান' দল নয়। অর্থাৎ শুধুমাত্র নেইমার নির্ভর নয়।
একটা জিনিস লক্ষ করে দেখবেন যে দলে একাধিক ম্যাচ উইনার রয়েছে আর যে দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে একাত্মবোধটা বেশি তারাই এই বিশ্বকাপে ভালো খেলছে। যেমন ক্রোয়েশিয়া। যেমন বেলজিয়াম।
বেলজিয়ামের আক্রমণ ভাগ যেন সোনায় বাঁধানো [ছবি: রয়টার্স]
আজ রাশিয়ায় কোয়ার্টার ফাইনালে পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা মুখোমুখি সেই বেলজিয়ামের। কেমন হবে এই ডেভিড বনাম গোলিয়াথের লড়াইটা?
সামনে রোমালু লুকাকু। পিছন থেকে অধিনায়ক ইডেন হ্যাজার্ড ও মিডফিল্ডার ডে ব্রুইনি। এক কথায় সোনায় বাঁধানো আক্রমণ ভাগ। বলতে গেলে, আজকের লড়াইটা মূলত ব্রাজিলের রক্ষণভাগ বনাম বেলজিয়ামের আক্রমভাগের। লুকাকুকে অন্যতম সেরা 'বক্স স্ট্রাইকার' বলা হয়।
হ্যাজার্ডরা চাইবেন লুকাকুকে লক্ষ করে একের পর এক বল বাড়াতে। এই সাপ্লাই লাইনটাকেই আটকাতে হবে ব্রাজিলকে। তিতের দলের ডিফেন্সের কাছে এই 'মিশন' সফল না হওয়ার কোনও কারণ নেই।
বেলজিয়ামের সমস্যাটা অন্য জায়গায়। অত্যন্ত সাদামাটা ডিফেন্স। জাপানের কাছে দু'দুটি গোল হজম করেছে বেলজিয়াম। এই ডিফেন্স নিয়ে নেইমারদের রোখা কিন্তু সহজ হবে না। কতকটা অসম্ভব তো বটেই।
ব্রাজিল কিন্তু শুধুমাত্র নেইমার নির্ভর নয় [ছবি এএফপি]
তবে নেইমাররা নন, এই বিশ্বকাপে তিতের সবচেয়ে বড় শক্তি তাঁর শক্তিশালী রিজার্ভ বেঞ্চ। দুটি হলুদ কার্ড দেখায় ক্যাসেমিরো আজ খেলবেন না। তাঁর জায়গায় নামবেন ফার্নান্দিনহো। ভাবতে পারেন ফার্নান্দিনহোর মতো ফুটবলারকেও বেঞ্চে সময় কাটাতে হচ্ছে। সুযোগ পাচ্ছেন শুধু পরিবর্তিত হিসেবে। মার্সেলোর জায়গায় লুই ফিলিপ লুই মাত্র দেড়খানা ম্যাচ খেলেছেন। আর এই দেড় খানা ম্যাচেই তো কাঁপিয়ে দিয়েছেন তিনি।
এত শক্তিশালী রিজার্ভ বেঞ্চ আছে বলেই আরও একটি বড় সুবিধা পাচ্ছেন তিতে। ম্যাচ চলাকালীন হঠাৎই স্ট্রাটেজি বদলে ফেলছেন তিনি। আগের ম্যাচে নেইমার শুরু করল বাদিক থেকে। দ্বিতীয়ার্ধে সেই নেইমারকেই দেখা গেল ডানদিক থেকে আক্রমণে উঠছেন।
২০০২ সালে শেষবার বিশ্বকাপ জিতেছিল ব্রাজিল। তার পর তিন বার শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে ব্রাজিলকে। শেষ বার নিজেদের ঘরের মাঠে জার্মানদের বিরুদ্ধে তো রীতিমতো লজ্জাজনক হার। রাশিয়া ২০১৮র নেইমাররা যেন আহত বাঘ।
সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে আজ ম্যাচের ফয়সালা ৯০ মিনিটেই হবে। আর ৯০ মিনিটের শেষে শেষ হাসি নেইমাররাই হাসবেন।