সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে না, তবে সাধারণ মানুষের সঙ্গে পুলিশের দূরত্ব কমবে

সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশ মানেগুন্ডা দমনের পাশাপাশি নিরাপরাধদেরও দমিয়ে রাখে

 |  2-minute read |   04-07-2018
  • Total Shares

কোনও সামাজিক বার্তা প্রচার করতে চাইলে বিজ্ঞাপনের সঙ্গে সময়সাময়িক ট্রপিক্যাল ইস্যু যদি মিশিয়ে দেওয়া যায় তাহলে নিঃসন্দেহে সেই বিজ্ঞাপন মানুষকে আরও বেশি করে আকর্ষণ করে। আর, সেই বিজ্ঞাপনে যদি কিছুটা মজা সরবারহ করে দেওয়া যায় তাহলে তো কেল্লাফতে। বিজ্ঞাপনও হিট আবার যে পণ্যের (এক্ষেত্রে সামাজিক বার্তা) জন্য এই বিজ্ঞাপন সেই পণ্যের গ্রহণযোগ্যতাও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভানা থাকে।

বাঙালি মাত্রেই ক্রীড়াপ্রেমী। আর অধিকাংশ বাঙালির প্রথম প্রেম ফুটবল। তাদের বৈকালিক আড্ডার অনেকটাই জুড়ে থাকে ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান বা বার্সেলোনা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।আর, প্রত্যেক চার বছর অন্তর ফুটবল বিশ্বকাপ। কেউ ব্রাজিল তো কেউ আর্জেন্টিনার সমর্থক। আবার কেউ জার্মানির হয়ে গলা ফাটান তো কেউ পর্তুগালকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখতে চান। এতটাই ক্রেজ যে বিশ্বকাপের সময় বাংলায় (বা গোটা ভারতেও) কোনও পণ্য বেচতে হলে বা কোনও জনস্বার্থ বার্তা প্রচার করতে হলে ফুটবলকে হাতিয়ার করা নিঃসন্দেহে বুদ্ধিমানের স্ট্রাটেজি।

কলকাতা পুলিশও ঠিক তাই করেছে। মানুষকে ট্রাফিক আইন মানতে উদ্যত করতে মেসি, রোনাল্দো বা নেইমারকে তাদের রোড সেফটি সম্পর্কিত বিজ্ঞাপনগুলোতে ফুটিয়ে তুলেছে। কিছুটা মজা করেই তৈরি করা হয়েছে এই বিজ্ঞাপনগুলো। যা মানুষের মনকে নাড়া দিতে বাধ্য।

body1_070418052817.jpg

body2_070418052833.jpg

body3_070418053210.jpgসৌজন্যে: কলকাতা পুলিশের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট

এমনিতেই পুলিশ সম্পর্ক মানুষের কিছুটা 'অন্যরকম' ধারণা রয়েছে। সাধারণ মানুষ মাত্রেই পুলিশ মানে গুরুগম্ভীর একটি বিষয় যারা গুন্ডা দমনের পাশাপাশি নিরাপরাধীদেরও দমিয়ে রাখেন। সাধারণ মানুষের কাছে ট্রাফিক পুলিশ মানে সেই সাদা পোশাক পরিহিত লোকটা যিনি চৌরাস্তার মোড়ে গাড়ি থামিয়ে কখনও কারণ এবং অধিকাংশ সময় অকারণে 'কেস' দেন।

ফুটবল নিয়ে ট্রাফিক সেফটির বিজ্ঞাপন, তাও আবার মজা করে। নিঃসন্দেহে এই বিজ্ঞাপন মানুষের মনে তৈরি হওয়া পুলিশ সম্পর্কিত ধারণা এক লহমায় অনেকটাই বদলে দিতে বাধ্য। সাধারণ মানুষ এখন বুঝতে পারছেন যে ওই সাদা পোশাক পরিহিত চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়ানো লোকটাও তাদেরই একজন। তিনিও ফুটবল দেখেন। মেসি নেইমারদের চেনেন। এবং সর্বপরি, গুরুগম্ভীর হলেও তিনিও মজা করতে চান।

এই বিজ্ঞাপন ট্রাফিক আইন ভঙ্গ কতটা রোধ করতে পারবে তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কিন্তু পুলিশ বাহিনীকে মানুষের 'কাছে' নিয়ে আসতে দুর্দান্ত সফল। কলকাতা পুলিশের কাছে তাই বা কম কিসের?

কলকাতা পুলিশ জনস্বার্থ বার্তা প্রচারের জন্য এই ধরণের মজার বিজ্ঞাপন আগেও করেছে। ভবিষ্যতেও করবে বলে আমি আশা করি।

গাড়ি চালাতে বা ফুটবল দেখতে আমরা সকলেই পছন্দ করি। কিন্তু মাঝে মাঝে অতিরিক্ত হয়ে গেলে বিরক্তি আসে। মনে একঘেয়েমি বাসা বাধে। সেই সময় যদি মজা করে ফুটবল আর গাড়ি চালানোর নিয়মাবলী এক করে দেওয়া যায় তাহলে মন্দ কী?

বরঞ্চ, লাভই আছে। 'বুদ্ধিজীবী' বাঙালির জীবন আবার বর্ণময় হয়ে ওঠে।

 

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

SOURAV SAMADDAR SOURAV SAMADDAR

The writer is an advertising professional.

Comment