ফেলুদা রক্তমাংসে গড়া কোনও মানুষ নয়, তাও প্রদোষ মিত্তিরের প্রতিবেশী বলে আমরা গর্বিত

১০ বেকার স্ট্রিটের মতো রজনী সেন রোডেও তৈরি হোক ফেলুদা সংগ্রহশালা

 |  2-minute read |   06-05-2018
  • Total Shares

কয়েক বছর আগে এক দোকানদারের সঙ্গে দরদাম নিয়ে জোর বচসা হচ্ছিল। কথায় কথায় আমি দোকানদারকে বললাম, "আমাকে বোকা বানাবার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন আমি ফেলুদার পাড়া রজনী সেন রোডের বাসিন্দা।" নিছকই কথার কথা। কিন্তু আমার এই উক্তি ম্যাজিকের মতো কাজ করল। মাঝ বয়সী দোকানদার আমার কথা শুনে যারপরনাই আহ্লাদিত। আর কোনও কথা না বাড়িয়েই আমার বলা দামে জিনিস বিক্রি করতে রাজি হয়ে গেলেন তিনি।

সে দিনই বুঝলাম যে প্রদোষ মিত্তিরের প্রতিবেশী হলে এ শহরে বাড়তি সুবিধাভোগ করা যায়। আমার পরম সৌভাগ্য যে আমি আবার ফেলুদার একেবারে পাশের বাড়ির প্রতিবেশী। সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা থাকতেন ২১ নম্বর রজনী সেন রোডে। ফেলুদার বাড়ির জমিটা এখনও রয়েছে। কিন্তু সেই জমিতে এখন দু'দুটো বাড়ি উঠেছে। তাই ঠিকানাও ভাগ হয়ে গেছে - ২১ এ ও ২১ বি। কিন্তু এ পাড়ার বাসিন্দারা এখনও ওই দুটি বাড়ি বলতে 'ফেলুদার বাড়িই' বোঝেন।

body1_050618122741.jpgছা-পোষা বাঙালি হয়েও ফেলুদার প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে আমি কিন্তু টেলিভিশনের পর্দায় মুখ দেখাতে পেরেছিলাম

যারা বেহালার চৌরাস্তায় থাকেন তাঁরা নিজেদের সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রতিবেশী বলতে পছন্দ করেন। এলগিন রোডের বাসিন্দারা হামেশাই বলে থাকেন যে তাঁরা সুভাষচন্দ্র বসুর পাড়াতে থাকেন। কিন্তু ফেলুদা তো রক্তমাংসে গড়া কোনও মানুষ নন। সত্যজিৎ রায়ের গোয়েন্দা গল্পের সিরিজের গোয়েন্দা চরিত্র। তা সত্ত্বেও, আমরা রজনী সেন রোডের বাসিন্দারা কিন্তু ফেলুদার প্রতিবেশী বলে গর্ববোধ করি।

করব নাই বা কেন? ছা-পোষা বাঙালি হয়েও ফেলুদার প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে আমি কিন্তু টেলিভিশনের পর্দায় মুখ দেখাতে পেরেছিলাম। বছর কয়েক আগে সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনেই একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানটি দেবশঙ্কর হালদার সঞ্চালনা করতেন। আবার এই দেখুন আজ এই এই ওয়েব পোর্টালটায় লেখার সুযোগ পেলাম।

body_050618122919.jpgশার্লক হোমসের মতোই ফেলুদার উপরও সংগ্রহশালা হোক

একটা সময় সত্যজিৎ রায় রজনী সেন রোডের লাগোয়া লেক টেম্পল রোডে থাকতেন। তাই তিনি রজনী সেন রোড সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকি বহাল ছিলেন। সত্যিজিৎ রায়ের সেই বাড়িটা এখনও রয়েছে। মালিকানা বদলেছে। এই বাড়িতেই একটা সময় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ও ভাড়া থাকতেন।

তবে এত গর্বের মাঝে আমার কিন্তু একটা ছোট আফসোস রয়েছে। গোটা শহর জুড়ে ফেলুদাকে নিয়ে থিম ক্যাফেটেরিয়া থেকে শুরু করে অনেক কিছুই হচ্ছে। অথচ যে পাড়াতে ফেলুদার বাড়ি ছিল সেখানেই তাঁর স্মৃতিবিজড়িত কিছুই নেই। ফেলুদার জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে রজনী সেন রোডে ফেলুদার উপর একটি সংগ্রহশালা করা উচিৎ। যে রকম লন্ডনের ১০ নম্বর বেকার স্ট্রিটে শার্লক হোমসের সংগ্রহশালা রয়েছে।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

MADHUMITA SENGUPTA MADHUMITA SENGUPTA

The writer is a 'proud neighbour' of Feluda.

Comment