বাঁকুড়ার একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির টাকা বেঁধে দিলেও বাকি স্কুলে নিয়মটি এখনও কেন লাগু হচ্ছে না?
প্রতিবছর হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী পাশ করেও চোখের জলে শিক্ষার আঙিনা থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হচ্ছে
- Total Shares
প্রতি বছর মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যেই একটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়।
সমস্ত সরকারি ও আধা-সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষক নেই, বহু পদ শূন্য অনুন্নত পরিকাঠামোয় আসন সংখ্যা সীমিত। তবে ছাত্রছাত্রীদের পরিবারের ঘাড়ে চাপানো হয় স্কুলের বিপুল বেতনের বোঝা। প্রারম্ভিক শিক্ষার (এলিমেন্টারি এডুকেশন) ক্ষেত্রে অর্থ্যাৎ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির হওয়ার টাকার অঙ্কটির ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশিকা থাকলেও পরবর্তী বিভিন্ন পর্যায়ে ছাত্রছাত্রী ভর্তির জন্য বেতন নির্ধারণের কোনও নির্দেশিকা নেই।
স্কুলগুলি যথেচ্ছভাবে ভর্তির টাকা ধার্য করেছে
এর সুযোগ নিয়ে স্কুলগুলি যথেচ্ছ ভাবে ভর্তির টাকা ধার্য করেছে। কোথাও দেড় হাজার টাকা কোথাও আবার চার হাজার টাকা আবার কোথাও সাড়ে ছহাজার টাকা ইচ্ছামতো টাকা নেওয়া চলছে, অবাধে। এই অবস্থায় প্রতি বছর হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী পাস করেও চোখের জলে শিক্ষার আঙিনা থেকে বিদায় নিতে বাধ্য হচ্ছে।
এই মাইনে বৃদ্ধির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চলছে।
স্কুলে স্কুলে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সংগঠিত করে বিক্ষোভ স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়েছে অনেকবার
সমস্ত স্কুলে স্কুলে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সংগঠিত করে বিক্ষোভ ডেপুটেশনও জমা দেওয়া হয়েছে অনেকবার, এখনও চলছে। ইতিমধ্যে এ'বছর এই আন্দোলনের চাপে বাঁকুড়া জেলায় স্কুল পরিদর্শক (ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টর) একটি সরকারি নির্দেশিকা জারি করেন। এই মর্মে যে, একাদশ শ্রেণির ভর্তিতে ২৪০ টাকা ও প্র্যাকটিক্যাল বিষয়ে অতিরিক্ত ১৪০ টাকা নেওয়া হবে। পাশাপাশি আবেদনপত্রের মূল্য বাবদ ২০ টাকার বেশি নেওয়া চলবে না।
গত বছরের মতো এ'বছরও ৫ জুন কলকাতা জেলা পরিদর্শককে স্মারকলিপি জমা দিয়ে বলা হয়, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে অত্যধিক হারে বেতন নেওয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করতে হবে।
দাবীর যৌক্তিকতা খারিজ না করলেও সরকারি টালবাহানা অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে স্কুলগুলির ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এই অবস্থায় গত ১৪ জুন ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকরা টানা ছ'ঘণ্টা জেলা পরিদর্শককে ঘেরাও করে রাখেন। আন্দোলনের চাপে জেলা পরিদর্শক ১৮ জুন (সোমবার) একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির টাকার অঙ্ক সংক্রান্ত নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারির লিখিত প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি এও বলেন যে সব স্কুল ইতিমধ্যেই বাড়তি যে বেতন নিয়েছে তা প্রত্যাহার করার নির্দেশ তিনি পাঠাবেন।
বিদ্যালয় পরিদর্শকের কার্যালয় ঘেরাও
এমতাবস্থায় আগামী সোমবারের মধ্যে জেলা পরিদর্শক তাঁর প্রতিশ্রুতি পালন না করলে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের সংগঠিত করে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। পাশাপাশি দাবি জানানো হয়েছে যে স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নের সমস্ত দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। এ ছাড়াও সমস্ত শূন্য পদে স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে।

