স্কুল লাইব্রেরি গঠন ও উন্নয়ন করলেই হবে না, লাইব্রেরিয়ানের ঘাটতি পূরণের দিকেও নজর দিতে হবে

আমাদের রাজ্যে উচ্চ শিক্ষার নিয়ম অনুসারে প্রতিটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে লাইব্রেরি থাকা প্রয়োজন

 |  3-minute read |   21-08-2018
  • Total Shares

স্কুল লাইব্রেরি খাতে বরাদ্দ অর্থের উৎস কেন্দ্রই হোক বা রাজ্য, সাম্প্রতিক আমাদের রাজ্যে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত সমস্ত স্তরে গঠন ও উন্নয়নপ্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে ৪০ কোটি টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করেছেন তা অতন্ত্য আনন্দের এবং গ্রন্থাগার কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়নের একটি সুস্থ প্রয়াস।  

body2_082118090136.jpgস্কুল লাইব্রেরি আছে কিন্তু বই দেবে কে?

আমাদের রাজ্যে উচ্চশিক্ষার নিয়ম অনুসারে প্রতিটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে লাইব্রেরি থাকা প্রয়োজন তা সত্ত্বেও ৭০০০ স্কুলের মধ্যে মোটে ২০০০-এর মতো স্কুলে লাইব্রেরিয়ান রয়েছে। তাই এখানে খুব স্বাভাবিকভাবে একটা প্রশ্ন থেকে যায় যে এই সব স্কুলগুলি তাহলে অনুমোদন পেল কী ভাবে?   

তবে এ ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো নিখুঁতভাবে অনুসরণ না করলে বিদ্যালয় গ্রন্থাগারে ভিত্তি সুদৃঢ় হবে না এবং নিজস্ব পাঠক সমাজের রুচি-পছন্দ অনুযায়ী আদর্শ সংগ্রহ গড়ে তুলতে গেলে অনেকগুলো দিক মাথায় রাখতে হবে। 

আমার মনে হয় সর্বপ্রথম একটি স্কুল লাইব্রেরি পলিসি চালু করা প্রয়োজন।

body1_082118090233.jpgআমার মনে হয় সর্বপ্রথম একটি স্কুল লাইব্রেরি পলিসি চালু করা প্রয়োজন

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল যে কোনও স্কুল তা সে সরকারি হোক বা বেসরকারি, সেই স্কুলে যদি গ্রন্থাগার, গ্রন্থ এবং লাইব্রেরিয়ান না থাকে তাহলে সেই স্কুল পিছিয়ে পড়বে। বর্তমানে সারা রাজ্যে মোট উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৭০০০। এদের মধ্যে প্রায় ১২০০ জন লাইব্রেরিয়ান স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) পরীক্ষা চালু হওয়ার আগে কাজে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এসএসসি-র মাধ্যমে ২০১১ সালে প্রায় ৪৫০জন লাইব্রেরিয়ান এবং ২০১৩ সালে প্রায় ১৩০ জন লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ করা হয়। সুতরাং, স্কুলে স্কুলে লাইব্রেরির জন্য শুধু টাকা বরাদ্দ করলেই হবে। আগে প্রতিটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে, দরকারি বইপত্র মজুত করতে হবে এবং লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ করা আশু প্রয়োজন। ভবিষৎ প্রজন্মকে সঠিক জ্ঞানের আলো দেখাবার জন্য এটা অবশই জরুরি। 

তাই স্কুলে স্কুলে উচ্চ মানের গ্রন্থাগার করলেই সমস্যার সমাধান করা যাবে না কারণ আমাদের রাজ্যে যতগুলো স্কুল আছে তার তুলনায় শিক্ষিত ও দক্ষ লাইব্রেরিয়ান অনেক কম। তাই বাধ্য হয় সেসব স্কুলের শিক্ষক বা শিক্ষিকারাই পালা করে লাইব্রেরির দ্বায়িত্ব সামলে থাকনে। অসংখ শুন্য পদ থাকলেও ২০১৩ সালের পর সরকারি কোনও স্কুলে লাইব্রেরিয়ান নিয়োগ করা হয়নি। এছাড়াও গ্রন্থাগার বিজ্ঞান (লাইব্রেরি সাইন্স) পাস করা পড়ুয়ারা তাই সুযোগের অভাবে নয় অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছেন নয়তো তারা বেসরকারি স্কুলগুলোতে যোগ দিচ্ছেন। সরকারি চাকরি সুরক্ষিত কিন্তু তও এঁদের তাতে অনীহা, কারণ অবশ্য অনেকগুলো। লাইব্রেরিয়ানদের শিক্ষাগত ও পেশাগত যোগ্যতা অনুসারে বেতনক্রম নির্ধারণ করা হয় না।

body3_082118090351.jpgগ্রন্থাগার পরিচালনার ক্ষেত্রে যথার্থ নিয়মকানুনও থাকা প্রয়োজন

পাশাপাশি সেসব গ্রন্থাগার পরিচালনার ক্ষেত্রে যথার্থ নিয়মকানুনও থাকা প্রয়োজন।

সিবিএসই, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, এনসিটি দিল্লি এবং রেলওয়ে স্কুলগুলিতে যেমন লাইব্রেরিয়ানদের শিক্ষক পদমর্যাদা দেওয়া হয় সরকারি স্কুলগুলির ক্ষেত্রে তাঁরা অশিক্ষক কর্মীর মর্যাদা পেয়ে থাকেন।

বহু স্কুলে অনেক বড় বড় গ্রন্থগারও থাকে যেখানে শয়ে শয়ে বই থাকে সেই সব সেখানে অনেক সময় একা একজন লাইব্রেরিয়ানের ক্ষেত্রে পুরো গ্রন্থাগারটা সামলানো সম্ভব হয়ে ওঠে না তাই এখন সহায়ক নিয়োগের প্রয়োজন পড়ে এবং তা নিয়োগেরও প্রয়োজন রয়েছে।

body4_082118090208.jpgআমাদের রাজ্যে উচ্চশিক্ষার নিয়ম অনুসারে প্রতিটি উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে লাইব্রেরি থাকা প্রয়োজন

বহু স্কুলে লাইব্রিয়ানদের নির্দিষ্ট কোনও কাজ থাকে না বলে আজ বহুদিন যাবৎ লাইব্রেরিয়ানদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

বর্তমানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর লাইব্রেরিয়ানদের যতোটার থেকে কম হারে বেতন দেওয়া হয়।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

DR ARUPRATAN DAS DR ARUPRATAN DAS

PRESIDENT | ALL BENGAL SCHOOL LIBRARIANS’ ASSOCIATION

Comment