সরকার হস্তক্ষেপ করলে সব বেসরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে সমান বেতন হওয়া উচিত
সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করার সময় স্কুলের শিক্ষা দানের মান ঠিক কেমন সেটা আগে বিচার করা উচিত
- Total Shares
এটা কখনোই অস্বীকার করা যাবেনা যে আমাদের রাজ্যে যেসব বেসরকারি বা প্রাইভেট স্কুলগুলি আছে তারা বিভিন্ন সময় নানা খাতে অবিভাবকদের থেকে অর্থ আদায় করছেন। তাই এই সব প্রাইভেট স্কুলগুলির বেতন নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রাজ্য সরকার এক বছর আগে একটি বৈঠক করেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল একটি খসড়া বিল তৈরি করতে এক বছর সময় লেগে গেল। তাই এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে বেসরকারি স্কুলের বেতন নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার ঠিক কতটা আন্তরিক। বিলটি কবে পাস হবে বা তা আদৌ কার্যকরী হবে কী না তা নিয়ে কোনও নিশ্চয়তা নেই।
গত সরকারের তুলনায় বর্তমান সরকারের আমলে বহু বেসরকারি স্কুল অনুমোদন (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) পেয়েছে। বর্তমান সরকার যে সব পদক্ষেপ করছে তার থেকে বোঝা যাচ্ছে যে প্রচ্ছন্ন ভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারা বেসরকারিকরণের দিকেই যাচ্ছে।
সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করার সময় স্কুলের শিক্ষার মান ঠিক কেমন সেটা আগে বিচার করা উচিত
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলছেন সেটা মূলত আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে বেসরকারি স্কুলের অবিভাবকদের মন পাওার উদ্যোগ ছাড়া আর কিছুই নয়। মূলত নির্বাচনী চমক হিসেবে এটা ব্যবহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এছাড়া আমি মনে করি একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেখানে সব ছাত্র-ছাত্রী তাদের শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছে সমান সেই স্কুলকে কখনোই এক নম্বর বা দু নম্বর শ্রেণীতে ভাগ করা উচিত নয়। আমি এর বিপক্ষে।
আমার মনে হয় সমস্থ বেসরকারি স্কুলে সমান বেতন বা টিউশন ফি হওয়া উচিত। কারণ বেসরকারি স্কুলের বেতন যদি সরকার হস্তক্ষেপ করে তাহলে নিয়মটা সবকটি স্কুলের জন্য এক থাকা উচিত।
সরকার হস্তক্ষেপ করলে সব বেসরকারি স্কুলের ক্ষেত্রে সমান বেতন হওয়া উচিত
এ ছাড়াও যখন একজন শিক্ষক বা শিক্ষিকা চাকরির জন্য আবেদন করবেন তাঁরাও ওই সব পিছিয়ে থাকা স্কুলগুলিকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। এর ফলে সেই সব স্কুলে পড়ুয়াদের সংখ্যা এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংখ্যার একটা তারতম্যর সৃষ্টি হবে। তাই আমার মনে হয় স্কুলের শ্রেণী বিভাজনের বিষয়টা ঠিক কতটা বাস্তবসম্মত সেটা এখনও ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।
পাশাপাশি অবিভাবকদের মধ্যে ইংরেজি মিডিয়াম ও বেসরকারি স্কুল সম্বন্ধে একটা উচ্চ ধারণা রয়েছে। অনেক সময় তাঁদের ধারণা হয় যে স্কুলটির যদি একটু বেশ জমকালো নাম হয় কিংবা বিদ্যালয়-ভবনটি যদি খুব সুন্দর হয় তা হলেই বোধহয় সেই স্কুলটি তাঁর সন্তানকে খুব ভালো শিক্ষাদান করতে পারবে। অবিভাবকরা যে বিষয়টা মনে রাখেন না সেটা হল যে স্কুলে তিনি তাঁর সন্তানকে ভর্তি করছেন সেই স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকার মান কেমন? সন্তানকে স্কুলে ভর্তি করার সময় স্কুলের শিক্ষার মান ঠিক কেমন সেটা আগে বিচার করা উচিত।
তাই সরকারি হস্তক্ষেপে যদি বেসরকারি স্কুলগুলির বেতন তথা অন্যান্য ফি নিয়ন্ত্রণ করতে হয় তাহলে সবকটি স্কুলের ক্ষেত্রে নিয়মটা সমান হওয়া উচিত।

