২০২২ সালে ১৭৫ গিগাওয়াট অচিরাচরিত শক্তি উৎপাদন ভারতের লক্ষ্য
খনিজ জ্বালানির বদলে অচিরাচিরত শক্তির উপরে জোর দিচ্ছে ভারত
- Total Shares
২০২২ সালের মধ্যে যাতে ভারত ১৭৫ গিগাওয়াট অচিরাচিরত শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম হয় সেই লক্ষ্যে ভারতের নিউ অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি (এমএনআরই) মন্ত্রক বিভিন্ন নীতি ও বিশেষ কয়েকটি পদক্ষেপ করেছে। এই ১৭৫ গিগাওয়াট রিনিউেয়বল শক্তির মধ্যে প্রায় ১০০ গিগাওয়াট শক্তি হবে সৌরশক্তি। সৌরশক্তি উৎপাদন করার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প চালু করা হয়েছে, যেমন - সৌর উদ্যান, স্মার্ট সিটি প্রজেক্ট, সৌর প্রতিরক্ষা প্রকল্প (সোলার ডিফেন্স স্কিম), সোলার ক্যানেল ব্যাঙ্ক, সৌর পাম্প এবং সৌর ছাদ প্রভৃতি। এখন বিশ্বের নানা জায়গায় পরিশোধিত (অপ্রচলিত) শক্তিকে কী করে আরও বাড়ানো যায় তা নিয়ে চলছে নানা গবেষণা। এই বিষয়ে ভারতও পিছিয়ে নেই।
তাই এই রিনিউয়েবল শক্তির উৎপাদন বৃদ্ধি ও তার সম্প্রসারণের মধ্য দিয়ে ভারত সরকার শক্তির প্রসার করতে চাইছে, এবং এই বিভাগটিকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছে। এই ক্ষেত্রে জোর দেওয়ার আরও কারণ হল, আমাদের চারপাশে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটছে, এনার্জি সিকিউরিটি, এনার্জি ক্রাইসিস, এনার্জি ইনডিপেনডেন্স,এনার্জি অ্যাক্সেস প্রভৃতি। জাতীয় সৌর মিশনের এই বিশাল লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার জন্য এমএনআরই বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে। ২০১৭ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ নভেম্বর পর্যন্ত জাতীয় স্তরে ভারতের গ্রিডে মোট ১১,৭৮৮ মেগাওয়াট রিনিউয়েবল শক্তি যোগ করা হয়। ২০১৭-১৮তে গ্রিডে ৫৫২৫.৯৮ মেগাওয়াট সৌর শক্তিও যোগ করা হয়।

এখন অবধি এক বছরে গ্রিডে যে পরিমাণ সৌর শক্তি যোগ করা হয়েছে তার মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ। তাহলে উক্ত বছরের শেষে গ্রিডে যোগ করা মোট সৌর শক্তির পরিমাণ গিয়ে দাঁড়াচ্ছে ১৬৬১১.৭৩ মেগাওয়াট, যার মধ্যে ৮৬৩. ৯২ মেগাওয়াট আসছে ছাদের প্যানেল থেকে। এই বছরের গোড়ার দিকে ভারত মোট কুড়ি গিগাওয়াট সৌর শক্তির উৎপাদনে সক্ষম হয়েছে। গত আট বছর ধরে এই লক্ষ্যে পৌঁছবার লড়াই চলছিল। গত ইউপিএ সরকার সৌর মিশনে স্থির করেছিল যে ২০২২ এর মধ্যে ২০ গিগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। সেই হিসেবে পুরোনো লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট সময়সীমার চার বছর আগে পৌঁছে গেছে। ২০১৮-১৯ এর অর্থ বছরের মধ্যে এমএনআরই-র লক্ষ্য যে তারা আরও বাড়তি ১৫.৬২ গিগাওয়াট যোগ করবে, গত অর্থ বর্ষের থেকে প্রায় ৭.৫ শতাংশ বেশি।
২০১৬-১৭ সালে প্রায় ৫.৫ গিগাওয়াট বায়ু শক্তি গ্রিড এ যোগ করা হয়। এখন অবধি কোনও দেশ শুধু এক বছরে এতখানি বায়ু শক্তি যোগ করতে পারেনি। এই প্রথমবার এক বছরে এতটা পরিমাণে বায়ু শক্তি যোগ করল ভারত। ভারতে এখন পর্যন্ত বায়ু শক্তির পরিমাণ হল মোটামুটি ৩৫ গিগাওয়াট। বায়ু শক্তি ইনস্টলড ক্যাপাসিটির দিক থেকে দেখতে গেলে ভারত রয়েছে চতুর্থ স্থানে। এই আগের দেশ গুলো হল চিন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানি। ভারতে যদি এই রিনিউয়েবল শক্তির উৎপাদন ও ব্যবহারের উপর আরও জোর দেয় তাহলে আমাদের দেশকে যে বাইরের দেশগুলোর উপর জীবাশ্ম-জ্বালানির (ফসিল ফুয়েল) আমদানির উপর নির্ভর করতে হয়, সেটা আর হবে না। জীবাশ্ম জ্বালানি ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির (রিনিউএবল এনার্জি) ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
ভারতে প্রায় তিন শতাংশই ওয়েস্টল্যান্ড। সেদিক থেকে দেখতে গেলে ভারত বাণিজ্যিকভাবে আনুমানিক ১০৯৬ গিগাওয়াট রিনিউএবল এনার্জি উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে। এই মোট পরিমাণটির মধ্যে বায়ু – ৩0২ গিগাওয়াট(১00 মিটারের মস্ত উচ্চতা), ছোট হাইড্রো – ২১ গিগাওয়াট, জৈব শক্তি - ২৫ গিগাওয়াট এবং ৭৫০ গিগাওয়াট সৌরশক্তি।

