মামলার সরাসরি সম্প্রচার মুক্ত বিচারের ধারণা অনেক বেশি প্রাধান্য পাবে
হাইকোর্টগুলোতেও এই ব্যবস্থা চালু করা উচিত
- Total Shares
এবার থেকে গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় এবং সাংবিধানিক মামলার শুনানি ও রায় দানের পদ্ধতি সরাসরি সম্প্রচার (লাইভ স্ট্রিমিং) করা হবে। বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা পাওয়ার লক্ষ্যে সুপ্রিমকোর্টর এই রায়টিকে আমি স্বাগত জানাই।
আদালত কক্ষে কী হচ্ছে সেটা সাধারণ মানুষ দেখতে পাবে। নিঃসন্দেহে এটা একটা খুব ভালো পদক্ষেপ কারণ সুপ্রিমকোর্ট দিল্লিতে বলে বহু মানুষের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে কী হচ্ছে বা বিশেষ কোনও একটি মামলার শুনানি পদ্ধতি কী ভাবে এগোচ্ছে সেখানে গিয়ে তা দেখা সম্ভব নয়। এমনকি যাঁরা দিল্লিতে থাকেন তাঁরাও যদি মনে করেন যে উচ্চ আদালতে গিয়ে কোনও মামলার শুনানি পদ্ধতি দেখবেন সে ক্ষেত্রেও একটি প্রবেশ পত্রের প্রয়োজন পড়ে যা জোগাড় করা খুব একটা সহজ ব্যাপার নয়। তাই এই ব্যবস্থার মাধ্যমে মামলার শুনানি পদ্ধতি ঠিক কী ভাবে হচ্ছে বা কী ধরণের সওয়াল–জবাব হচ্ছে তা জানা যাবে, সাধারণ মানুষ তা দেখতে পাবে।
এজলাসে ঠিক কী হয় সেই অভিজ্ঞতা সাধারণ মানুষের থাকে না
এজলাসে ঠিক কী হয় সেই অভিজ্ঞতা সাধারণ মানুষের থাকে না। আমরা গণতান্ত্রিক দেশে বাস করি তাই আমার মনে হয় এই অভিজ্ঞতাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সবার যেমন বিচার পাওয়ার অধিকার আছে ঠিক তেমন ভাবেই বিচার প্রক্রিয়া কী ভাবে হয় তাও জানার অধিকার রয়েছে। সাধারণ মানুষের অর্থেই তো এই সব কিছু চলছে।
বিচারপতিরা সময়মতো কোর্টে বসছেন কী না তাও জানা যাবে।
অনেক সময় কোনও কারণ ছাড়াও একটি মামলার শুনানি বছরের পর বছর চলতে থাকে। এটা অন্যায়। মামলার দ্রুত বিচার কাম্য। এবং মামলাকে দীর্ঘনিত করার জন্য কারা দায়ী সেটাও বোঝা যাবে। বিচার ব্যবস্থা অকারণে দীর্ঘায়িত হচ্ছে কী না তাও সবাই দেখতে পাবে।
মামলার দ্রুত বিচার কাম্য
অনেক ক্ষেত্রে এমনও দেখা যায় যে কোনও একটি মামলার ক্ষেত্রে বিচারপতি কিছুটা উদাসীন বা তিনি হয়তো ঠিকঠাক বিচার করছেন না। তাই যদি সরারসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা থাকে তাহলে তিনি অনেক বেশি সচেতন থাকবেন। পাশাপাশি আইনজীবীরাও সর্তক হবেন। এবং অনেক বেশি দায়িত্বপরায়ণ হবেন।
সম্প্রতি শীর্ষ আদালত বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে যেসব রায় ঘোষণা করেছেন কোটি কোটি সাধারণ মানুষের জীবনে তার প্রতিফলন অনেকটাই হবে, অথচ মাত্র কয়েকজন আদালতে উপস্থিত থাকতে পারেন। তাই আমার মনে হয় এটা একটা ইতিবাচক পদক্ষেপ।
এর ফলে আমাদের দেশে মুক্ত বিচারের ধারণাটি আরও অনেক বেশি প্রাধান্য পাবে।
দেশের নাগরিক এখন নিজের অধিকার নিয়ে অনেক বেশি সচেতন। মামলা মানুষের অধিকারের কথা মাথায় রেখেই করা হয়।
বিচারপতিরা সময়মতো এজলাসে বসছেন কী না তাও জানা যাবে
হয়তো বিশেষ কোনও একটি মামলা সম্পর্কে কারোও উৎসাহ রয়েছে তাই তিনি দেশের যে কোনও প্রান্তে বসেই সেই মামলাটির গতিপ্রকৃতি জানতে পারবেন।
ফলত দেশের বিচারব্যবস্থা ও বিচার পদ্ধতির প্রতি সাধারণ মানুষের সম্মান এবং আস্থা দুই-ই বাড়বে। কোনও মামলায় কী রায় দান করা হচ্ছে সেটা সাধারণ মানুষ জানতে পারে ঠিকই তবে রায় দানের পদ্ধতিটি ঠিক কী ভাবে হয় সেটা সবাই জানতে পারে না।
আমার মনে হয় দেশের হাইকোর্টগুলোতেও এই ব্যবস্থা চালু করা উচিত।

