হোয়াটসঅ্যাপ বা সোশ্যাল মিডিয়ার টোটকার উপর নির্ভর না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

এধরণের মেসেজ পেলে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

 |  3-minute read |   01-08-2018
  • Total Shares

মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই) অনুসারে চিকিৎসকরা সাধারণ মানুষের জ্ঞ্যাতার্থে স্বাস্থ্য বিষয়ক ও সচেতনতামূলক তথ্য স্মার্টফোনের হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া যেমন টুইটার কিংবা ইনস্টাগ্রাম বা ফেসবুকে লিখতে বা পাঠাতে পারেন।

তবে এখানে কয়েকটা বিষয় রয়েছে, প্রথমত, যিনি এই জাতীয় বার্তা বা মেসেজ পাঠাচ্ছেন তাঁকে অবশ্যই একজন স্বীকৃত চিকিৎসক হতে হবে। দ্বিতীয়ত, একজন চিকিৎসক যখন স্বাস্থ্য বিষয়ক কোনও মেসেজ পাঠাচ্ছেন তখন তিনি যদি তাঁর নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেন তাহলে সেই মেসেজটিতে সেটা লিখে দিতে হবে। অর্থাৎ সেই মেসেজে যেন এটা লেখা থাকে যে মতামতটি তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত মতামত। আর তা যদি না হয় তাহলে তাঁকে তিনি তথ্যটি কোথা থেকে নিয়েছেন তার উৎস বা রেফারেন্সর নামও মেসেজের সঙ্গে লিখে দিতে হবে। অর্থাৎ তিনি যে তথ্যটি পাঠাচ্ছেন তার ভিত্তি কী? 

অথবা তিনি যদি আরেক জনের বক্তব্য তুলে দেন তাহলে তাঁকে সেই ব্যক্তির নাম দিয়ে পুরো বক্তব্যটি উদ্ধৃতি চিহ্ন বা কোটেশনের মধ্যে রেখে পাঠাতে হবে। তাই যদি কোনও বক্তব্য উদ্ধৃতি চিহ্নর মধ্যে না থাকে তাহলে ধরে নেওয়া হবে যে তথ্যটি প্রেরকের ব্যক্তিগত মতামত।

body1_080118030752.jpgএধরণের মেসেজ পেলে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন

এখানে একটা কথা পরিষ্কার করে রাখা ভালো যে কেউ যদি নিজেস্ব মতামত বলে কোনও ভিত্তিহীন বা ভুল মেসেজ পাঠান তাহলে সে ক্ষেত্রে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা যাবে না। তবে তিনি যদি এমন কোনও মেসেজ বা ভুল বার্তা পাঠান যা সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে তাহলে তা অনৈতিক এবং বেআইনি।

এবার আসি নির্দিষ্ট কোনও উদৃতির উৎস বা 'রেফারেন্সের' প্রসঙ্গে। যখন কোনও চিকিৎসক তাঁর পাঠানো মেসেজের সঙ্গে সেই যদি সেই মেসেজের উৎসর নাম লিখে দেন তবে তা যথেষ্ট বলে ধরা হবে না। কারণ তাঁকে পাশাপাশি এও লিখতে হবে যে, সেই তথ্যটি যেখান থেকে নেওয়া হয়েছে সেই উৎসটি ঠিক কতটা পোক্ত বা সেই রেফারেন্সের ঠিক কতটা যথার্থতা রয়েছে।

body4_080118044653.jpgচিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে টোটকা প্রয়োগ করুনতাছাড়া সেই মেসেজটি কোনও 'কেসস্টাডি'-র অংশ কী না তাও লিখতে হবে। কারণ অনেক ক্ষেত্রে ক্যাসেস্টাডি-কে ও সেই চিকিৎসকের ব্যক্তিগত মতামত বলে বিচার করা হয়।

যদি কোনও চিকিৎসক দাবি করেন যে বিশেষ কোনও চিকিৎসা পদ্ধতি বা ওষুধ কিংবা টোটকা ব্যবহার করে কোনও শারীরিক সমস্যার উপশম ঘটতে বাধ্য তবে তাও অনৈতিক বলে বিচার্য্য হবে এবং সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থাও নেওয়া সম্ভব।

যেহেতু হোয়াটসঅ্যাপ বা অন্যান্য কোনও সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরণের মেসেজ পাঠানোর ব্যাপারে কোনও নির্দেশ দেওয়া নেই তাই প্রচুর মানুষ মেসেজের মাধ্যমে বহু টোটকা পান। এই সব টোটকা আবার অনেককেই ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগ করারও চেষ্টা করেন।body2_080118044845.jpgকেউ যদি নিজের মতামত বলে কোনও ভুল মেসেজ পাঠান তাহলে সেই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা যাবে না

আমরা অনেক সময় এই ধরণের অনেক মেসেজ পেয়ে থাকি এবং তা প্রয়োগ করারও চেষ্টা করি কিন্তু মাথায় রাখতে হবে যে, যে মেসেজই পান না কেন তা যদি ব্যবহারিক জীবনে প্রয়োগ করার চেষ্টা করেন তাহলে সেটা কোনও কাজের কথা নয়। অথবা কোনও রোগী যদি এই ধরণের টোটকার উপর চোখ বুজে নির্ভর করেন তাহলে তাঁর প্রাণ সংশয়ও হতে পারে।

যদি দেখা যায় যে কোনও চিকিৎসক কোনও ভিত্তিহীন উদ্ধৃতি পাঠিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছেন এবং তার ফলে কোনও ব্যক্তির ক্ষতি হয়েছে সে ক্ষেত্রে সেই চিকিৎসকের সর্বোচ্চ শাস্তি হবে সাত বছরের জেল সঙ্গে তাঁর লাইসেন্সও বাতিল করে দেওয়া হবে।

তাই জনসাধারণকে বলব এই ধরণের কোনও রকম মেসেজ পেলে তা চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন বা চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি যাচাই করে নিন।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

DR. KRISHAN KUMAR AGGARWAL DR. KRISHAN KUMAR AGGARWAL

Former National President IMA | Recipient of Padma Shri Award

Comment