চিড়িয়াখানা-ভিক্টোরিয়ার পরে কেন ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইকো পার্ক

...এইটুকু বাদ দিলে, শীতের দুপুরে ইকো পার্ক ক্রমেই জমে উঠছে

 |  3-minute read |   28-01-2019
  • Total Shares

সপ্তম আশ্চর্য কী? সেই উত্তর না হয় দেওয়া যায়, কিন্তু যদি জানতে চাওয়া হয় যে সপ্তম আশ্চর্য কেমন, সেই উত্তর কী ভাবে দেওয়া সম্ভব?

শীত পড়লেই যাঁরা চিড়িয়াখানা-মিউজিয়াম-ভিক্টোরিয়া বুঝতেন, এখন তাঁদের অনেকেই যাচ্ছেন ইকো পার্কে। কলকাতা শহরের বুকে অনেকটা সবুজ আছে, স্রেফ সেই জন্য? না। কেন যাচ্ছেন তারই পাঁচটি কারণ।

সপ্তম আশ্চর্য

ইস্টার দ্বীপের নাম অনেকেই শুনেছেন। অদ্ভুতদর্শন সেই বিশাল পাথুরে মূর্তিগুলোর জন্যই তার এত খ্যাতি। হাতের নাগালে সেই মূর্তিগুলো পেলে ক্ষতি কী!

উষর মরুভূমির মাঝেই কি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে উত্তুঙ্গ পিরামিড? গিজার সেই বিশাল পিরামিড ঠিক কতটা বিশাল, সেই আন্দাজ করা সম্ভব না হলেও পিরামিড চারদিক থেকে কেমন দেখতে, সেই আন্দাজটুকু তো করা যাবে!

কিংবা ধরুন পেট্রা। সামনে থেকে কেমন দেখতে লাগে? ভিতরের দেওয়ালগুলো মোটামুটি কেমন? সামনের সেই গুহাটা তুলনায় কতটা ছোট?

dscn8685_012819062651.jpgইকো পার্কে পেট্রার প্রতিরূপ।

এমনি করেই চিনের প্রাচীর, অ্যাম্ফিথিয়েটার, ক্রাইস্ট দ্য রিদিমার এমনকি তাজমহল পর্যন্ত রয়েছে ইকো পার্কে। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর মতো এখানে সপ্তম আশ্চর্য দর্শনের সুযোগ রয়েছে।

বিন্দুতে সিন্ধু দর্শন

জাপানে বৌদ্ধ উপাসনাগৃহের পরিবেশ কেমন? তাদের নীতিকথার সঙ্গে পরিচিত হতে চান? ঠিকানা: ইকো পার্ক।

আইফেল টাওয়ার দেখতে কেমন? কতটা উঁচু সেটি বোঝা না গেলেও আন্দাজ করতে পারেন। ঠিকানা: ইকো পার্ক।

dscn8477_012819062745.jpgজাপানে বৌদ্ধ উপাসনাগৃহের প্রতিরূপ।

বাংলার পোড়ামাটির মন্দির রয়েছে, আবার রয়েছে নানা ধরনের মুখোশে সাজানো বাগান। তালের যে পাখা আগে ঘরে-ঘরে থাকত, এখন যেগুলি কাজে লাগে স্রেফ পুজোয় সন্ধ্যারতির সময়ে, সেই পাখার সিমেন্টের প্রতিরূপ রয়েছে এখানে।

খাওয়াদাওয়া

সুশি একবার চেখে দেখতে চান? জাপানের বিখ্যাত সুশি খাওয়ার অন্যতম ঠিকানা হল ইকো পার্ক।

হোয়াইট টি থেকে নানা স্বাদের চা পাবেন এই পার্কে। সিকিমের তরুণ বানাচ্ছেন চাউমিন-চিলি চিকেন... যাকে বলে বাঙালির চিনা খাবার।

dscn8623_012819062847.jpgমুখ বদলাতেও ইকো পার্কে যাওয়া যায়।

যাঁরা রান্নাকরা খাবার নিয়ে চিড়িয়াখানায় বনভোজন করতে গিয়ে নাজেহাল হয়েছেন, তাঁরাও যেতে পারেন ইকো পার্কে। কোনও না কোনও জায়গা ফাঁকা পাবেনই যেখানে চাদর বিছিয়ে বসে পড়তে পারেন।

তা ছাড়া ইকো পার্কের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে রয়েছে দোকান খাবারের নানা দোকান। গুমটির মতো দোকানগুলোর খাবার অন্তত খাদ্যরসিকদের পছন্দ হবে না। তবে নৌকাযোগে কাফে একান্তে-তে গিয়ে কফির কাপে চুমুক দিতে পারেন।

বিনোদন

বুদবুদের মধ্যে ঢুকে জলে ভেসেছেন কখনও?

বড় জলাশয় মানেই বোটিং... তার বাইরে অন্য বিনোদনের মজা পেতে হলে ঠিকানা হতে পারে ইকো পার্ক। তা ছাড়া সাইকেলে ঘুরতে পারেন ঘণ্টা হিসাবে ভাড়া নিয়ে। ছোটদের জন্য স্পেশাল হল রোলার স্কেটিং। এখানেই শেষ নয়, জলার ধারে বসে অনেকটা সময় কাটিয়ে দিতে পারেন নিজের সঙ্গে কথা বলে। শীতের দুপুরে চিড়িয়াখানা-ভিক্টোরিয়ার ভিড় থেকে একটু দূরে এই ইকোপার্ক তাই কলকাতার নতুন ঠিকানা হয়ে উঠেছে... ছুটির দিনে বেড়ানোর আদর্শ জায়গা।

নতুন গন্তব্য

চিড়িয়াখানায় প্রতিবছর নতুন নতুন প্রাণী আনা হচ্ছে এমন নয়। বরং ভোঁদড়-সাদা কাকের মতো প্রাণীগুলো এখন আর নেই। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের ভিতরে কী আছে, সে খোঁজ অনেকেই রাখেন না।

dscn8662_012819063021.jpgঅন্য আকর্ষণ।

উল্টো দিকে, ইকো পার্ক বেশ সাজানো-গোছানো। ধুলো নেই, তাই ছোটাছুটিও করা যায়। পাড়ার পার্কে ছোটদের জন্য যে সব খেলার উপকরণ থাকে এখানও সে সব আছে। তাই শিশুরা বেশ মজা পায়।

শীতের দুপুরে তাই কোনও কলকাতার নতুন গন্তব্য হয়ে উঠেছে ইকো পার্ক।

তবে এখানে বেশ কয়েকটি নেতিবাচক দিকও আছে। শীতের মরসুমে এখানে চূড়ান্ত অব্যবস্থা দেখা যাবে। সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সমস্যার কথা জানিয়ে সুবিচার না পাওয়ার উদাহরণ আছে। কর্মীদের বেশিরভাগের আচরণ খুই উদ্ধত। অকারণ তাঁরা সমস্যা তৈরি করতে পারেন। এইটুকু বাদ দিলে, শীতের দুপুরে ইকোপার্ক ক্রমেই জমে  উঠছে।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment