কাশ্মীরের পুরনো অশান্তির ছবি নতুন দাবি নিয়ে ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়
মানুষের উপর অত্যাচারের বিভ্রান্তিকর দাবি
- Total Shares
কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু কাশ্মীরে সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা বাতিল করে এই দুই রাজ্যকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারপর থেকেই এর পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত নিয়ে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। বিশেষত,পাকিস্তানের সোশ্যাল মিডিয়াতে এই নিয়ে প্রবল চর্চা চলেছে। অজস্র ভুয়ো দাবির বন্যা বয়ে চলেছে ফেসবুক টুইটার দুনিয়ায়।
এর মধ্যে কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারী বেশ কয়েকটি ছবি পোস্ট করে দাবি করেছেন যে, কাশ্মীরের বিশেষ স্টেটাস তুলে নেওয়ার পর ভারতীয় সেনা বাহিনী সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে। ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফওয়া) দেখেছে দাবিটি বিভ্রান্তিকর।
গত ৫ অগাস্ট এক ফেসবুক ব্যবহারকারী নাম মাওঃ আহমদ বীন জহুর তিনটি ছবি শেয়ার করে দাবি করেছেন, ''কাশ্মীরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকার কারনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হত্যা গুমখুন,ধর্ষন প্রকাশ পাচ্ছে না।মিনিটে মিনিটে চলছে নির্যাতন।
মাওলা তুমি মুসলমানদের রক্ষা করো।
আমিন।''
ছবিগুলি শেয়ার হয়েছে ১৮ হাজারের বেশিবার। পোস্টটির আর্কাইভ এখানে দেখতে পারেন।
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফওয়া) ছবিগুলি খতিয়ে দেখে যে, এই ছবি ও দাবি একেবারেই ভুয়ো। কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে এদের কোনও যোগই নেই।
আমরা প্রথমে গুগল-এ কি ওয়ার্ড''আর্মি অট্রোসিটিস ইন কাশ্মীর আফটার আর্টিকল ৩৭০ রেভোকড' দিয়ে সার্চ করি। আমরা এমন কোনও রিপোর্ট পাই না যেখানে ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পর কাশ্মীরে সেনা বাহিনীর অত্যাচার নিয়ে রিপোর্ট এসেছে। এরপর আমরা ছবিগুলি নিয়ে রিভার্স সার্চ করি।
জহুরের ব্যবহৃত প্রথম ছবিটি ২০১৬ সালে lahoreworld.com নামের একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়। ছবিটি কোথাকার তা আফওয়া পুরোপুরি নিশ্চিত করতে না পারলেও ছবিটি যে পুরনো তা নিশ্চিত করতে পেরেছি আমরা।
দ্বিতীয় ছবিটি ২০১০ সালে কাশ্মীর ফ্রিডম স্ট্রাগল ব্লগ পোস্ট ডট কম নামের সাইট-এ প্রকাশিত হয়। ভারতীয় সৈন্যরা কাশ্মীরের মানুষের উপর কিভাবে অত্যাচার করছেন সে সংক্রান্ত লেখায় ছবিটি ব্যবহার করা হয়। তারপরেও ছবিটি নানা জায়গায় নানা প্রসঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে।
তৃতীয় ছবিটি আহমদ বীন জহুর ছাড়াও জনৈক পাক সাংবাদিক আমির আব্বাস সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট করেন। আমির আব্বাসের ট্যুইটের আর্কাইভ দেখতে পাবেন এখানে।
আমির আব্বাস ‘পাকিস্তান বোল নেটওয়র্ক’-এর সাংবাদিক। তিনি গত ৪ অগস্ট এই দু’টি ছবি ট্যুইট করে লেখেন – “কাশ্মীরে বীরত্ব দেখিয়ে খুব গর্ব বোধ করছেন? এ ঘটনা শুধু এবং শুধুমাত্র লজ্জার। আপনাদের নিষ্ঠুর সেনাবাহিনী নির্দোষ এবং নিরস্ত্র কাশ্মীরীদের অকথ্য মারধর করছে। এই যদি আপনাদের বাহাদুরি আর শৌর্যের নমুনা হয়, তাহলে তাকে আমরা ধিক্কার জানাই। এ ঘটনায় উৎসব না করে লজ্জা পান।“
প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অন্তত হাজার জন এটি রিট্যুইট করেন। এমনকি ফেসবুকেও এটি শেয়ার করা হয়।
এই ছবিটি ২০০৪ সালে রয়টার্সের জন্য ড্যানিশ ইসমাইল নামে এক চিত্রগ্রাহকের তোলা।
ছবির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে – “১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ শ্রীনগরে যে ভয়াবহ স্কুটার বিস্ফোরণ হয়, তার জেরে এই মহিলার বাড়ির লোকেদের পুলিশ আটক করে। তার পরেই এদের রাস্তায় বসে কাঁদতে দেখা যায়। এই বিস্ফোরণে কেউ জখম হননি।“ (REUTERS/Danish Ismail FK/BM)
সুতরাং, এ কথা স্পষ্ট যে কাশ্মীরে বর্তমানে যাই ঘটুক না কেন, এই ছবি দু’টির সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ
JHOOTH BOLE KAUVA KAATE
The number of crows determines the intensity of the lie.
- 1 Crow: Half True
- 2 Crows: Mostly lies
- 3 Crows: Absolutely false