ফ্যাক্ট চেক- নেতাজি কে "যুদ্ধ অপরাধী" বলেছিলেন নেহেরু?

বিভ্রান্তিকর তথ্য ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়

 |  2-minute read |   29-04-2019
  • Total Shares

 

body_042919083825.jpg

নির্বাচনের মরশুমে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম রাজনীতি এবং রাজনীতি সংক্রান্ত পোস্ট। সেখানে ভিন্নতর বিষয়ও পেয়ে যাচ্ছে রাজনৈতিক রং। এবারে ভোটারদের আপিল করে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু সংক্রান্ত একটি পোস্ট ফেসবুকে ভাইরাল হলো।

"সুমন সরকার" তাঁর ফেসবুক পেজে একটি চিঠির ছবি পোস্ট করে ভোটারদের কংগ্রেসকে ভোট না দেওয়ার আপিল করেছেন। তার দাবি এই চিঠিটি ১৯৪৫ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লেমেন্ট এটলীকে লিখেছিলেন জওহরলাল নেহরুর। এখানে নেহেরু, নেতাজিকে "যুদ্ধ অপরাধী" বলেছেন এবং তাঁকে রাশিয়ায় ঢুকতে দেওয়া হয়েছে বলে যোগ্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও লেখা রয়েছে চিঠিতে। ইন্ডিয়া টুডে অ্যান্টি ফেক নিউজ ওয়ার রুম বিভিন্ন তথ্য খুঁজে জানতে পেরেছে, এই চিঠিটির সমগ্র বিষয়বস্তু বিভ্রান্তিকর যা ইতিহাসের তথ্যের সঙ্গে মেলে না।ফেসবুক ব্যবহারকারী" সুমন সরকার"-এর এই পোস্টটি ইতিমধ্যে প্রায় হাজারের কাছাকাছি মানুষ শেয়ার করেছেন।

আপাতদৃষ্টিতে দেখলে এই ভাইরাল চিঠিতে বেশ কিছু ভুল ধরা পরে। ইংরেজিতে এটলী বানান ভুল লেখা হয়েছে। একটি বাক্যে ইংরেজি বাক্য গঠনেও ভুল পাওয়া যায়। দ্বিতীয়ত, চিঠির তারিখ রয়েছে ২৭ ডিসেম্বর, ১৯৪৫। সরকারি তথ্য অনুযায়ী বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু হয় ১৮ অগাস্ট, ১৯৪৫।

গতবছর ফ্যাক্ট চেকিং ওয়েবসাইট "অল্ট নিউজ" এই ভাইরাল চিঠিটিকে নিয়ে বিশদ তদন্ত করে একটি রিপোর্ট লেখে।

এই রিপোর্ট থেকে বেশ কিছু অসঙ্গতি জানা যায়। ২০১৬ সালে এনডিএ সরকার নেতাজির জীবন সংক্রান্ত তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরার ফলে, এই চিঠিটির ব্যাপারে 915/11/C/6/96 নম্বর সরকারি রেকর্ডে জানা যায়।নেতাজির ভাইপো প্রদীপ বসু ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়িকে কিছু চিঠি লিখেছিলেন যেখানে এই চিঠিটির বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। প্রদীপ বসু তার লেখা বই "সুভাষ বোস এন্ড ইন্ডিয়া টুডে : এ নিউ ট্রিস্ট উইথ ডেসটিনি ?" তে লিখেছেন যে এই চিঠির ভাষ্য পণ্ডিত নেহেরুর নিজের নয়। তাঁর স্টেনোগ্রাফার শ্যামলাল জৈন ১৯৭০সালে নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য সমাধানের জন্য তৈরী জি ডি খোসলা কমিশনের সামনে জানিয়েছিলেন এই চিঠিটির ব্যাপারে। এই বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, শ্যামলালের জবানী এই চিঠির ভাষ্য। এই বইতে যে চিঠিটি রয়েছে সেটি ভাইরাল চিঠিটির মতো ব্যাকরণ ও বানানগত ভাবে ভুলে ভরা নয়। শ্যামলাল, কমিশনের সামনে তার জবানবন্ধীতে জানিয়েছেন যে নেহেরু তাঁকে এই চিঠিটি মুখে মুখে বলেন আর তিনি এটি টাইপ করেন। তাঁর কথামতো এই ঘটনাটি হয়েছিল কংগ্রেস নেতা আসাফ আলীর দিল্লির বাড়িতে ২৬ অথবা ২৭ ডিসেম্বর।

"অল্ট নিউজ" বিভিন্ন সংবাদ পত্রের পুরোনো খবর ঘেঁটে জেনেছে যে পণ্ডিত নেহেরু ২৬ অথবা ২৭ ডিসেম্বর ১৯৪৫ সালে দিল্লিতে ছিলেন না, সম্ভবত তিনি ছিলেন এলাহাবাদে।অল্ট নিউজ জানাচ্ছে, শ্যামলাল জৈন এর দেওয়া তথ্য জি ডি খোসলা কমিশন হয়তো গ্রহণ করেন নি, কারণ কমিশন তাদের রিপোর্টে জানিয়েছিল যে তাইপেইতে বিমান দুর্ঘটনাতেই ১৮ অগাস্ট , ১৯৪৫ সালে নেতাজির প্রাণহানি হয়। ভাইরাল এই চিঠিটির তথ্য ঐতিহাসিক তথ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তাই চিঠিটির সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।

 

ফ্যাক্ট চেক- নেতাজি কে
Claimতৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্লেমেন্ট এটলীকে লেখা একটি চিঠিতে নেতাজি কে "যুদ্ধ অপরাধী" বলেছিলেন নেহেরু Conclusion ভাইরাল এই চিঠিটির তথ্য ঐতিহাসিক তথ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়
JHOOTH BOLE KAUVA KAATE

The number of crows determines the intensity of the lie.

  • 1 Crow: Half True
  • 2 Crows: Mostly lies
  • 3 Crows: Absolutely false
If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

CHAYAN KUNDU CHAYAN KUNDU @kunduchayan

Senior Producer, India Today TV.

Comment