বিমুদ্রাকরণের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে মমতাকে নেত্রী হিসাবে তুলে ধরল তৃণমূল

জোটের নেত্রী কেন মমতা, ঘুরিয়ে সেটাই বোঝানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল

 |  5-minute read |   09-11-2018
  • Total Shares

জোট হলে নেত্রী মমতাই, ঘুরিয়ে কিছুটা এই বার্তাই কি দিতে চাইলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন? বার্তাটি অবশ্য ডেরেকের নয়, বার্তাটি আসলে তৃণমূলের বা দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের। সকালেই তিনি টুইট করেন।

ডেরেক যে ফেসবুক লাইভ করেছেন সেখানে বার্তাটি ইংরেজি ভাষায় বলে নয়, এই বার্তায় সাধারণ মানুষের সমস্যা নিয়ে একটি শব্দও বলেননি তিনি (লাইভের মাঝে ফোনে সেই বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে), তিনি মূলত দু’টি দিক তুলে ধরেছেন – একটি হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দূরদর্শিতা এবং অপরটি হল তাঁর নেতৃত্ব।

দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী যখন বলতে শুরু করেন তখন অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন যে কোনও প্রতিবেশী দেশকে ‘শিক্ষা’ দেওয়ার প্রসঙ্গের প্রাককথন করছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বিষয়টি স্পষ্ট হল বেশ কিমছুখক্ষণ পরে। সোজা কথায় ৫০০ টাকা ও ১০০০ টাকার নোট বাতিল। তার ফল কী হতে পারে সে কথা বক্তৃতা শেষ হওয়ার ১৬-১৭ মিনিটের মাথায় টুইট করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সেটি মিলে যায়।

সরকার অবশ্য এ সব মানতে রাজি নয়। এ দিনও অর্থমন্ত্রী তুলে ধরেছেন বিমুদ্রাকরণের সুফল।

বিমুদ্রাকরণের ফল কী? “যখন কেউ পক্ষে লেখেন তখন মনে হয় তিনি ঠিক লিখছেন, যখন কেউ বিপক্ষে লেখেন তখন মনে হয় তিনি ঠিক লিখছেন।” এক সাংবাদিক সহাস্যে কথাগুলি বলছিলেন... তিনি বিমুদ্রাকরণের কিছুই বোঝেননি বা বোঝেন না এমন নয়, আসলে বিমুদ্রাকরণ নিয়ে অর্থনীতিবিদ ছাড়া সকলের মতামতই জানা হয়ে গেছে দেশের মানুষের। অর্থনীতিবিদদের মতামত জানা সম্ভব হয়নি, কারণ তিনি হয় ‘ওরা’র দলে, না হয় ‘আমরা’র দলে।

ফেরা যাক বিমুদ্রাকরণের দু’বছর পরে ফেসবুক লাইভে।

এক বছর পরে তৃণমূল নেত্রীর টুইট স্মরণ করেছিলেন ডেরেক ও’ব্রায়েন। ভোটের আর কয়েকমাস বাকি রয়েছে। এই অবস্থায় তিনি স্মরণ করালেন দেশকে -- বাংলা নয়, ইংরেজি ভাষায়।

প্রথমে বললেন কত দ্রুত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিমুদ্রাকরণের কুফল বুঝতে পেরেছিলেন। সে কথা বলতে বলতেই মোবাইল ফোনে ধরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি তাঁর কথা বললেন। তারপরে প্রশ্ন, কী ভাবে অত দ্রুত এই সিদ্ধান্তের ভবিষ্যৎ দেখতে পেলেন তৃণমূল নেত্রী।

পরের অংশে ডেরেক জানালেন কী ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের ছাতার তলায় সেদিন দাঁড়িয়েছিলেন ওমর আবদুল্লা (জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী) অরবিন্দ কেজরিওয়াল (দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী) প্রমুখ।

আগামী ১৯ জানুয়ারি কলকাতায় ব্রিগেডে মহাজোটের সভা। যাঁর সঙ্গে আলেচনার পরে, যাঁর উপস্থিতিতে ফেডেরাল ফ্রন্টের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল আপাতত তিনি এই ফ্রন্টে নেই – তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির প্রধান তথা তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (কেসিআর)। কর্নাটকে এইচডি কুমারস্বামীর শপথ অনুষ্ঠানে জোটের যে ছবি দেখা গিয়েছিল, ভোট যত এগিয়ে আসছে সেই ছবিও তত ম্লান হচ্ছে।

যাঁরাই মনে করছেন জোটে থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ, তাঁরাই কার্যত সরে যাচ্ছেন। এই অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেশের নেত্রী হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করলেন ডেরেক ওব্রায়েন।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

SUMITRO BANDYOPADHYAY
Comment