দাঁড়িভিটে গুলিতে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় সত্যিটা জানাক সরকার, দাবি মানুক পরিবারের

সিবিআই তদন্তের দাবিতে শবদাহ করতে দিচ্ছে না নিহতদের পরিবার

 |  3-minute read |   23-09-2018
  • Total Shares

ইসলামপুরে ছাত্রহত্যার ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।

স্কুলের ছোট ছেলেরা আন্দোলন কাকে বলে জানে না। তারা দেখছিল যে স্কুলের যেগুলি মূল পাঠ্য বিষয়, সেই সব বিষয়ের শিক্ষক নেই। তারা সেই শিক্ষকের দাবি করছিল স্কুলের মধ্যেই। আন্দোলন বলতে এটাই।

islampur-embed_092318023356.jpgস্কুলের ছোট ছেলেরা আন্দোলন কাকে বলে জানে না (ফাইল চিত্র)

এই অবস্থায় হঠাৎ দেখা গেল যে এখানে উর্দুর শিক্ষক নিয়োগ করা হল। তাতেই ক্ষোভ বেড়ে গেল। স্কুলে উর্দু কোনও পড়ুয়াই ছিল না। আগুনে ঘিয়ের কাজ হল ওই উর্দু শিক্ষক নিয়োগ করা। সরকারি ভাবে বলা হচ্ছে যে ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের মধ্যে বহিরাগতরা গিয়ে সেখানে গুলি চালিয়েছে।

এই বহিরাগতরা কারা? অতিরিক্ত পুলিশসুপার, যিনি আগের দিন সাংবাদিক বৈঠক করেছেন, তিনি তো দায়সারা ভাব দেখাচ্ছিলেন, এড়িয়ে যাওয়ার ভাব দেখাচ্ছিলেন। দুটো বাচ্চা ছেলে মারা গেল, একজন প্রাণ হাতে করে বাঁচার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পুরো রাজ্যের লোক জানতে চাইছে কী ঘটেছিল। অতিরিক্ত পুলিশসুপার যদি পরিষ্কার করে বলতেন যে “অমুক জায়গা থেকে এত লোক এসেছিল যাদের আমরা চিহ্নিত করেছি, যারা গুলি চালিয়েছে তাদের চিহ্নিত করেছি।” তিনি এই ভাবে বলেননি, তিনি দায়সারা ভাব দেখিয়ে বলে দিলেন যে “আমরা কয়েকজন লোককে গ্রেপ্তার করেছি” যাদের ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।

ছাত্ররা আন্দোলন করল, ছাত্রদের গুলি করে মারা হল, বিজেপি পথে নেমে তার বিরোধিতা করতে করতে নামল, বিজেপি কর্মীদের গ্রেপ্তার করে তাদের ফাঁসিয়ে দেওয়ার রাজনীতি শুরু করল, এবং শিক্ষামন্ত্রী বলে দিলেন যে আরএসএস এবং বিজেপি দায়ী! আরএসএস কী ভাবে দায়ী? এই ভাবে সংগঠনের নাম নেওয়া তো খুব সহজ। শিক্ষামন্ত্রীকে আমি চ্যালেঞ্জ করছি তাঁর যদি ক্ষমতা থাকে তা হলে তিনি প্রমাণ করুন যা বলেছেন।

মিথ্যা দোষারোপ করে সিপিএমের কায়দায় মানুষকে বিভ্রান্ত করার যে রাজনীতি তা বাংলায় শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তারা সিপিএমের থেকে সমস্ত শিক্ষাই নিয়েছে। সিপিএম-ও এই ভাবেই মানুষ খুন করত – কৃষক খুন করত, শ্রমিক খুন করত, উনিশশো সত্তরের দশকে ছাত্র খুন করেও অস্বীকার করত। সেই একই পথে হাঁটল তৃণমূল কংগ্রেস।

s_embed1_092318023002.jpgনিহত রাজেশের শোকার্ত পরিমাণ (পিটিআই)

ছাত্রদের রক্ত আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে লেগেছে, বাংলার মানুষ তাকে ক্ষমা করবে না। ভারতের ইতিহাস বলছে, স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে জরুরি অবস্থার আন্দোলন, যখন যখন আন্দোলনের মধ্যে ছাত্ররা অংশগ্রহণ করেছে, সরকার যখন ছাত্রদের নিপীড়ন করেছে, ছাত্ররা গর্জে উঠেছে এবং দেশ তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। সমস্ত সরকার বদল হয়েছে এবং ভারত স্বাধীনতাও লাভ করেছিল।

সেই অতীতের ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা বলতে পারি যে এই রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারও আর কিছুদিনের জন্য আছে। এই পুরো আন্দোলন থেকে নজর ঘোরানোর জন্য তারা বলছে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

এই রাজ্যের পুলিশদপ্তরের দায়িত্বে রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। তাঁকে মনে করিয়ে দিতে চাই, সন্ন্যাসিনীদের ধর্ষণ করা হয়েছিল নদিয়ায়, তখন ওঁর এক মন্ত্রী আগ বাড়িয়ে বলেছিলেন এর সঙ্গে বিজেপি যুক্ত। পরবর্তীকালে দেখা গেল যে ওপার বাংলা থেকে আগত অনুপ্রবেশকারীদের দ্বারা তিনি লাঞ্ছিতা হয়েছিলেন।

embed_bjp_092318023125.jpgবুধবার বাংলা বনধের ডাক দিয়েছে বিজেপি (পিটিআই)

এই ঘটনাতেও আগামীদিনে আমরা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ক্ষমা চাইতে দেখব। ইতিমধ্যেই সঙ্ঘের পক্ষ থেকে সঙ্ঘের নেতারা জানিয়েছেন যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি তিনি নিজের অবস্থান স্পষ্ট না করেন, ক্ষমা না চান তা হলে তাঁরা আইনি সাহায্য নেবেন।

সরকার বলুক কারা গুলি চালিয়েছে, বলতে না পারার অর্থ সরকারের কাছে কোনও তথ্য নেই, তার অর্থ এই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার উপরে প্রশাসনের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। সেই ব্যর্থতার দায়ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেওয়া উচিত।

আমরা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাইছি, যে ভাবে নিহত দুই ছাত্রের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবিতে এখনও শেষকৃত্য করেননি, তাঁরা বলছেন যে সিবিআই তদন্ত হোক। তাঁরা রাজনীতি চান না। পরিবারের পাশাপাশি আমরাও চাই পুলিশের গুলিতে যে দুই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে পুলিশ তা স্বীকার করুক, তাদের পরিবারকে সরকার ক্ষতিপূরণ দিক, সরকার ওই দুই ছাত্রের পরিবারের সব দাবি মেনে নিক। আমরা চাই যথাযথ ভাবে ওই দুই ছাত্রের দাহকার্য হোক।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

RITESH TIWARI RITESH TIWARI @iamritesht

The writer is the state secretary of BJP, West Bengal.

Comment