মমতা-চন্দ্রবাবু বৈঠক: জোট রাজনীতি কোন পথে?

জল মাপা রাজনীতিতে স্বাভাবিক তবে আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে নেতিবাচক

 |  2-minute read |   19-11-2018
  • Total Shares

সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী সোমবার সারা দেশের নজর ছিল নবান্নের দিকে। কাঙ্ক্ষিত বৈঠকটি হল, চন্দ্রবাবু নাইডু এলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করলেন। বেরিয়ে এসে একটি যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনও হল। কিন্তু তার পর থেকে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সংবাদমাধ্যম প্রায় নিশ্চুপ, আঞ্চলিক স্তরে কিছুটা নজরে এলেও জাতীয় স্তরের সংবাদমাধ্যমে ছিল না একেবারেই কোনও তাপ-উত্তাপ।

নিশ্চিত ভাবে একটা রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। হঠাৎ এই নিরুত্তাপ কেন? কী আশা ছিল ভারতের মানুষেয় অথবা সংবাদমাধ্যমের এবং কোন আশাটা ভঙ্গ হল?

body1_111918085941.jpgনবান্নে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুকে স্বাগত জানাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ছবি: সুবীর হালদার)

প্রথমেই বলে রাখা ভালো যে বহু চর্চিত এবং বহু প্রচারিত ২২ নভেম্বরের বৈঠকটি বাতিল হয়েছে। এই ঘটনা নিশ্চিত ভাবে মহাজোটের ভবিষ্যতের উপরে একটা বড় প্রশ্নচিহ্ন দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন চলছে। কিন্তু এই মুহূর্তে বিরোধী পক্ষের লড়াই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এবং সেটাকেই সামনে রেখে ভারত ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন চন্দ্রবাবু নাইডু। দেশের ভবিষ্যতের কথা তুলেই গত এক বছর ধরে সর্বাগ্রে সোচ্চার থেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এইরকম একটা প্রেক্ষাপটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে চন্দ্রবাবু নাইডুর বৈঠকের ঠিক আগে বাতিল হয়ে গেল ২২ নভেম্বরের বৈঠক। এবং বৈঠকের পরে নিরুত্তাপ হয়ে গেল সংবাদমাধ্যম।

কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করে চন্দ্রবাবু নাইডু বিরোধী মহাজোটের দিশা নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন। এমন একটি দিশা যে বিষয়ে গত এক বছর ধরেই আড়ষ্ঠতা প্রকাশ করে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরবর্তীকালে নিজেদের দ্বিধাদ্বন্দ্বের কথা গোপন করেননি মায়াবতী এমনকি অলিলেশ যাদবও। বিষয়টি এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে যে ১১ ডিসেম্বর বিধানসভা নির্বাচনগুলির ভোট গণনার আগে কোনও বৈঠকেই বসতে চাইছেন না এই নেতানেত্রীরা।

karnataka_call_for_i_111918090052.jpgকর্নাটকে বিরোধী ঐক্যের সেই ছবি (ফাইল চিত্র: পিটিআই)

দেশবাসীর একটা ধারনা তৈরি হয়েছিল যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চন্দ্রবাবু নাইডুর বৈঠকের পরে এই অচলাবস্থায় কোনও একটি নতুন রাস্তা বেরিয়ে আসবে। সেই রাস্তা তো বেরলই না, উল্টে ধোঁয়াশা তৈরি হল। তা হলে কি নাইডুর কংগ্রেসপ্রীতির বিষয়টি সহজ ভাবে নেননি মমতা? তিনি কি অন্য কোনও ফর্মুলায় মহাজোটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে চাইছেন?

মমতা প্রথম থেকেই ফেডারেল ফ্রন্টের কথা বলে আসছেন। যেটাকে গুলিয়ে দিয়েছেন চন্দ্রবাবু নাইডু। এই রকম অবস্থায় প্রাথমিক ভাবে যা ইঙ্গিত পাওয়া গেছে যে মহাজোট সম্পর্কে পরবর্তী পদক্ষেপ ১১ ডিসেম্বরের পরেই হবে। অর্থাৎ এটা একটা জল মেপে নেওয়াপ প্রক্রিয়া।

এই ধরনের জল মেপে নেওয়ার প্রক্রিয়া রাজনীতিতে স্বাভাবিক কিন্তু মানুষের আস্থা অর্জন করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নেতিবাচক। ১১ ডিসেম্বর থেকেই লোকসভার শীতকালীন অদিবেশন শুরু হচ্ছে। নির্বাচনের ফলাফল হয় কংগ্রেসকে শক্তিশালী করবে না হয় বিজেপিকে আরও শক্ত জমির উপরে দাঁড় করাবে। সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলির কী ভূমিকা হয় সেটা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ।

যেমন চন্দ্রশেখর রাও তাঁর উদ্যোগ থেকে পিছিয়ে এসেছেন এ রকম আর কোনও ঘটনা ঘটে কিনা সে দিকে নজর থাকবে দেশবাসীর। বরং বলা যায় চন্দ্রবাবু নাইডু এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক বিজেপি বিরোধী মহাজোটকে বড় অনিশ্চয়তার মুখে ফেলে দিল।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

PRASENJIT BAKSI PRASENJIT BAKSI @baksister

The writer is a veteran journalist.

Comment