পঞ্চায়েতে মনোনয়ন প্রত্যাহারের পরেও এত হিংসা, কী চাইছে তৃণমূল-বিজেপি

শাসকদল চাইছে ভোট হোক এখনই, বিরোধীরা গোছানোর সময় চায়

 |  2-minute read |   03-05-2018
  • Total Shares

পঞ্চায়েতের দিনক্ষণ ঠিক, মনোনয়ন পর্ব শেষ। কিন্তু হিংসার শেষ নেই। হিংসাকে কেন্দ্র করেই ভোট হবে কি হবে না, সে সবও ঝুলে রয়েছে। এই প্রথম পঞ্চায়েত ভোটে রাজনৈতিক হিংসায় শাসক এবং বিরোধী দলগুলির নিহতের সংখ্যা প্রায় সমান। এ বার লড়াইটাও হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি। কারণ সাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং প্রধান বিরোধী দল হিসাবে বিজেপি এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ। এই প্রথম বিজেপি গতবারের তুলনায় তিন গুণ আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে।

গতবার বিজেপি প্রার্থী দিতে পেরেছিল ১২,০০০ মতো আসনে, এবার তা বেড়ে হয়েছে ৩৩,০০০ যা মোট আসনের ৫০ শতাংশের বেশি। প্রধান দুই যুযুধান দলের মধ্যে লড়াই বেধেছে, যার নেপথ্যে রয়েছে টাকার খেলা, গুণ্ডাবাজি ও ২০১৯ সালের আগে এলাকা দখলে রাখা।

panchayat_body_050318081129.jpgরাজ্যজুড়ে হিংসা (ফাইল চিত্র)

বিরোধীদের বক্তব্য, পুলিশ ও প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে শাসকদল যে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে, তাতে নিরপেক্ষ ভোট হওয়া মুশকিল, সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে ভোট করানো হোক, রাজ্য পুলিশের উপরে যে তাদের আস্থা নেই, সে কথা বিরোধীরা জানিয়েই দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও আদালতকে। তা ছাড়া রাজ্যের হাতে যে সংখ্যক পুলিশ রয়েছে, তাতে সব বুথে সশস্ত্র নিরাপত্তা দিয়ে অবাধ ও শান্তপূর্ণ নির্বাচন করানো সম্ভব নয়।স্বভাবতই বিরোধীরা চাইছে এই সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করে তবেই ভোটগ্রহণ হোক, তাতে ভোটগ্রহণের দিন কিছুটা পিছিয়ে গেলেও ক্ষতি নেই।

কিন্তু শাসকদল ১৪ মে-তে ভোট করানোর ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। তারা বিরোধীদের ঘর গোছানো ও আরও শক্তি সঞ্চয় করানোর সময় দিতে নারাজ। রাজ্যে যে হিংসা চলছে, তা কেন্দ্রের কাছে তুলে ধরে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবণতি দেখাতে চাইছে বিজেপি, একই সঙ্গে রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারি করার পথও প্রশস্ত করতে চাইছে। আর শাসকদলের লক্ষ্য, সন্ত্রাসে ভয় পেয়ে যাতে কেউ ভোট দিতে না বের হয়।

অনেক জায়গায় এখন বিজেপি প্রার্থীরা ঘরছাড়া। রাজ্যের ৫০ শতাংশ আসন মহিলা সংরক্ষিত হওয়ায়, বিরেধীদের অভিযোগ, শাসকদলের সন্ত্রাসে স্বয়ং প্রার্থীই ঘরছাড়া। ফলে তাদের শ্বশুরবাড়ির উপরে হামলা হয়েছে। তা ছাড়া প্রার্থী দিলেই যে সব হয়ে যায় না, ভোটের দিন পর্যন্ত তারা ময়দান ছাড়ছে না এবং বিরোধীদের বুথমুখী হতে দেবে না, সে কথাও বুঝিয়ে দিতে চাইছে শাসকদল।

bharati_body2_050318081222.jpgএখনই ভোট চাইছে শাসকদল (ফাইল চিত্র)

এ দিনই আবার পাঁচ আক্রান্তকে নিয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করেছেন তৃণমূলের আটজন সাংসদ। তারাও আবার প্রমাণ করতে চাইছে, হিংসা ছড়াচ্ছে বিজেপিই।

বিরোধীরা যেখানে সব আসনে প্রার্থীই দিতে পারছে না, সেখানে অনেক আসনে লড়াই হচ্ছে তৃণমূল বনাম বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের মধ্যে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বঙ্গ বিজেপিকে নির্দেশ দিয়েছেন, বিক্ষুব্ধ তৃণমূলকে দলে টানতে, তাই বিজেপির সমর্থন পেয়ে যেতে পারেন তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থীরা। তৃণমূল চাইছে, প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করতে না পারলেও গোঁজপ্রার্থীরা যেন কোনও ভাবেই মাথা তুলতে না পারে।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

ROMITA DATTA ROMITA DATTA

The writer is Associate Editor, India Today.

Comment