মুকেশের গলা অমরত্ব লাভ করেছে কেন?

কে এল সায়গলের ঘরানায় গাইতে শুরু করে দ্রুত তিনি রাজ কাপুরের গলা হয়ে উঠলেন

 |  2-minute read |   27-07-2018
  • Total Shares

প্রতিটি কথা যেন নিঃসারিত হয় যেন অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে। এই কথাটি বোধহয় সবচেয়ে বেশি মানানসই মুকেশের ক্ষেত্রে, যিনি আজ বেঁচে থাকলে ৯৫-এ পা দিতেন। হৃদয় দিয়ে গান গাইছেন - অন্যান্য শিল্পীদের চেয়ে এই কথাটি খুব সম্ভত মুকেশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য।

মহম্মদ রফি ও কিশোরে কুমারের পাশাপাশি বহু বছর ধরে দেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে শাসন করেছেন তিনি। ১৯৭৬ সালে বিদেশ ভ্রমণের সময় তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে ভারতের সঙ্গীত জগতে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে তা সহজে পূরণ করা সম্ভব নয়।

body1_072718072408.jpg

তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল সঙ্গীত জগতে। স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিলেন গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা তাঁর অসংখ্য গুণমুগ্ধ শ্রোতা। আসলে, নিজের জগতে তিনি ছিলেন অনন্য। শুধুমাত্র তাঁর কণ্ঠ দিয়ে তিনি জয় করতে পেরেছিলেন অসংখ্য মানুষের হৃদয়। বেঁচে থাকলে তাঁর বয়স ৯৫ হত, কিন্তু মাত্র ৫৩ বছর বয়সেই তিনি চিরকালের জন্য আমাদের থেকে বিদায় নিয়েছিলেন।

শুরুতে তিনি অনেকটা কেএল সায়গলের ধাঁচে তিনি গান গাইতেন। কিন্তু দ্রুত তিনি সেই ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন রাজ কাপুরের গলা হয়ে। 'আগ', 'আওয়ারা' ও 'শ্রী ৪২০' ছবিতে রাজ কাপুরের গলায় গান গেয়েছিলেন তিনি। এর মধ্যে 'মেরা জুতা হ্যায় জাপানি' তো রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করে ফেলছিল, শুধু ভারতে নয়, রাশিয়াতেও। এর পর আর কারও কোনও সন্দেহ রইল না যে তিনি সত্যিই একজন প্রতিভাবান গায়ক।

body2_072718072420.jpg

দুঃখ, বেদনা, যন্ত্রণা যে ভাবে তিনি তাঁর গলায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন তা এককথায় অতুলনীয়। তাঁর গাওয়া গান মানুষ উপলব্ধি করতে পারত। তাঁর গাওয়া গান মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যেত।

'জানে কাহাঁ গায়ে ওহ দিন', 'জিস গলি মে তেরা ঘর এ হো বালমা', 'চন্দন সা বদন'-- আমাদের বেড়ে ওঠাই তো এই সমস্ত গান শুনে। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে কোনও তালিম না থাকা সত্ত্বেও তিনি স্বচ্ছন্দে রাগপ্রধান গাইতে পারতেন। তাঁর গান শুনে মনে হত একজন সাধারণ মানুষ হৃদয় দিয়ে গানটা গাইছেন।

তাঁর হৃদয় ভোলানো গানের তালিকা অনেকটাই লম্বা। রাজ কাপুরের মতই মনোজ কুমারের নেপথ্যেও তিনি বেশ কয়েকটি অনবদ্য গান গেয়েছেন। ক্রান্তিতে মনোজ কুমারের হয়ে গলা দিয়েছিলেন নীতিন মুকেশ। কিন্তু সেই গান জনমানসে ছাপ ফেলতে পারেনি। আসলে ততদিনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে ফেলেছেন নীতিনের বাবা মুকেশ। কোনও সন্দেহ নেই যে রাজ কাপুর ও মনোজ কুমারের সাফল্যের পিছনে মুকেশের গলার অবদান অনেকটাই।

মুকেশের গলা শুনলে আমাদের শেলির সেই বিখ্যাত উক্তিটি মনে পড়ে যায়: "যেই গানগুলো সত্যিকারের বেদনার বার্তা নিয়ে আসে সেই গানগুলোই প্রকৃত অর্থে মধুর।"

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

JASKIRAN CHOPRA JASKIRAN CHOPRA @surkhaab

She is a journalist by profession, and has worked with United News of India, The Times of India and The Pioneer.

Comment