নারী হয়েও শবরীমালায় প্রবেশের বিরোধিতা করছেন? তা হলে আমার কথার জবাব দিন

শবরীমালা হিন্দুনারীদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, তা তিনি আস্তিত হোন বা নাস্তিক...

 |  2-minute read |   08-01-2019
  • Total Shares

ঘটনা হল, শবরীমালা এখন রাজনৈতিক ফুটবলে পরিণত হয়েছে, তার চেয়ে বেশি কিছু নয়।

এ নিয়ে অবশ্য অবার হওয়ার কিছু নেই, কারণ এটাই রাজনীতির ধর্ম।

তবে সত্যি কথা বলতে কী, যেটা সবচেয়ে অবাক করছে তা হল মন্দিরে মহিলাদের ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন মহিলারাই। সেটা দেখা যাচ্ছে সামাজিক ভাবে এবং রাজনৈতিক ভাবেও।

যাঁরা বাধা দিচ্ছেন তাঁদের উদ্দেশে আমি বলব – প্রেক্ষাপটের দিকে তাকিয়ে ভাবুন।

প্রত্যেক হিন্দু নারীর কাছেই শবরীমালা একান্ত ও গভীর ভাবে ব্যক্তিগত ব্যাপার হতে পারে। তা তিনি আস্তিক হন, নাস্তিক হন, ‘শহুরে নকশাল’ হন, মাওবাদী হন, ভক্ত হন বা অন্য কিছু হন।

কেন?

একটু পুরোনো কথা মনে করুন।

reuters-girl_0107190_010819071552.jpg আপনি কি বয়ঃসন্ধিকালের সেই দিনটার কথা ভুলে গেছেন য়েদিন আচমকাই আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হল যে আপনি ‘অশুচি’? (ছবি: রয়টার্স/ ফাইল)

আপনি কি বয়ঃসন্ধিকালের সেই দিনটার কথা ভুলে গেছেন য়েদিন আচমকাই আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হল যে আপনি ‘অশুচি’?

আমাকে বলুন যে বয়ঃসন্ধিকালে যখন আপনাকে বোঝানো শুরু হল যে ‘মেয়ে’ হিসাবে জন্মগ্রহণ করার জন্য আপনি কী কী করতে পারেন এবং রক্তপাত হচ্ছে বলে আচমকাই আপনাকে কোন কোন কাজে হাত লাগাতে পারবেন না সেই ধাঁধায় পড়ে আপনি যথেষ্ট সময় ব্যয় করেননি?

১৪ বছর বয়সে পা ধুয়ে একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন হালুয়া-পুরী তো বটেই সঙ্গে কিছু টাকাও পেয়েছিলেন এবং সে সব ছিনিয়ে নেওয়া হল বিশ্রী ভাবে। কেন তা করা হল তার কোনও ব্যাখ্যাও দেওয়া হল না।

রান্নাঘরে ঢোকাও বন্ধ হয়ে গেল।

যেন আপনার স্পর্শেই আচার পচে যাবে।

আপনি জল দিলে আপনার ঠাকুমা তা না খেয়ে ফিরিয়ে দিলেন।

আপনার পরিবারের সকলে মিলে ঠাকুরের মন্দিরে পুজো দিতে গেলেন আর আপনি দাঁড়িয়ে রইলেন মন্দিরের বাইরে। কেউ কোনও ব্যাখ্যাও দিল না, কেউ দুঃখপ্রকাশ পর্যন্ত করল না।

এখনও কি আপনি বলবেন যে আপনি বিন্দুমাত্র অস্বস্তিতে পড়েননি বা অপমানিত হননি? আপনি একটুও রেগে যাননি? বিরক্ত হননি?

প্রকৃতির কোনও এক দানে আপনি দেবীত্ব থেকেও বঞ্চিত হলেন।

আপনার ঠাকুমা আপনার থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন, মন্দিরে আপনি ব্রাত্য হয়ে যাচ্ছেন।

এই সব অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মুখে পড়ছেন আপনি – তার উপরে পুরো শরীর জুড়ে আপনি বেদনা অনুভব করছেন!

sabarimala-inside_01_010819071633.jpgআপনি কি চান না যে সেই বিধিনিষেধ ঘুচে যাক? (ছবি: পিটিআই)

যদি এতকিছুর পরেও আপনি কুপিত না হয়ে থাকেন তা হলে শুধুমাত্র রক্তপাত হওয়ার জন্য নারীদের মন্দিরে প্রবেশের বিরোধিতা করতে পারেন। তবে আমাদের বাকিদের কাছে এটা ব্যক্তিগত ব্যাপার।

যে ব্যাপার থেকে এতদিন আপনাকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল এখন সেটা আদায় করার সময় – কারণ সেই নোংরা রক্তটা প্রকৃতি আপনাকে দিয়েছে আপনার মাতৃত্বের জন্য।  

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000
Comment