ফ্যাক্ট চেক: না, গোটা দেশের জন্য এক বিদ্যুৎ মাশুল জারি করা হচ্ছে না
ফেসবুকে দাবি করা হয়েছে, মোদী সরকার 'এক দেশ এক বিদ্যুৎ বিল' নামের আইন আনতে চলেছে
- Total Shares
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন দোরগোড়ায়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রচারে ও নেমে পড়েছে।তবে শুধুমাত্র জনসভা বা জনসমাবেশ নয়, প্রচার চলছে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়েও। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী-সমর্থকরা সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে বিভিন্ন ধরণের পোস্ট করে চলেছেন।
এই প্রচার অভিযানের মধ্যেই, ১১ই জানুয়ারী ‘বিজেপি ওয়েস্ট বেঙ্গল’ নামের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করা হয়েছে। সেই পোস্টে বলা হয়েছে, "বিদ্যুতের দাম এক হবে গোটা দেশে। 'এক দেশ এক দাম' আইন আনতে চলেছে মোদী সরকার।" অর্থাৎ, কেন্দ্রীয় সরকার এমন একটি আইন প্রণয়ন করতে চলেছে যার ফলে গোটা দেশের গ্রাহকদের সমান বিদ্যুৎ মাশুল দিতে হবে।
এইখানে পোস্টটির আর্কাইভ দেখতে পাবেন।
ইন্ডিয়া টুডের অ্যান্টি-ফেক নিউজ ওয়ার রুম (আফয়া) অনুসন্ধানে দেখেছে, এই পোস্টটি বিভ্রান্তিকর। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই বিজেপির রাজ্যসভা সদস্য স্বায়ত মালিক অধিবেশন চলাকালীন এমন একটি পরামর্শ দিয়েছিলেন। বিভিন্ন দৈনিকে সেদিন এই খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল।
কিন্তু সেই পরামর্শ যে অধিবেশনে গৃহীত হয়েছিল, কিংবা কেন্দ্রীয় সরকার সেই পরামর্শ মেনে কোনও আইন প্রণয়ন করতে চলেছে, এমন কোনও খবর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বরঞ্চ, এর পরের দিন, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে একটি খবর প্রকাশ করেছিল। মন্ত্রীর সেই পরামর্শ, কেন বাস্তবসম্মত নয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে সেই প্রতিবেদনে।
ইন্ডিয়া টুডের তরফ থেকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার প্রাক্তন অধিকর্তা অনির্বান গুহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
তিনি জানান, "৯৩ সালে ব্যাণিজ্যিকরণের স্বার্থে ভারত সরকার পণ্য সমন্বয় নীতি বন্ধ (Freight Equalization Policy) করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। দেশের বিদ্যুৎ পরিষেবাও পুরো মাত্রায় বানিজ্যিক। তাই দেশ জুড়ে এক বিদ্যুৎ মাশুল জারি করলে কিছু রাজ্যে তা স্বাগত জানবে আবার বেশ কিছু রাজ্য বিপাকে পড়বে। তাই কোনও কেন্দ্রীয় সরকারই এই নীতি অনুসরণ করার চেষ্টা করেনি। বিজেপি সরকার যে এমন কোনও আইন প্রণয়নের চিন্তা করছে এমন খবর কোথাও শোনা যায়নি।"
আফয়ার অনুসন্ধানে দেখা গিয়েছে যে ২০১৯ সালের বাজেট ঘোষণার সময়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীথারামন 'ওয়ান নেশন, ওয়ান গ্রিড, ওয়ান ফ্রিকুয়েন্সি' নীতির কথা ঘোষণা করেছিলেন।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় বিদ্যুত মন্ত্রকের সচিব নন্দন সহায় দাবি করেন যে ভারতে ইতিমধ্যেই সেই নীতি রূপায়ণ করা সম্ভব হয়েছে। এই প্রকল্পের মাধম্যে বর্তমানে দেশের পাঁচটি আঞ্চলিক গ্রিডকে একই ছাতার তলায় আনা হবে। এর মূল লক্ষ্য - স্বাধীন ভারতের ৭৫তম বর্ষে, অর্থাৎ ২০২২ সালের মধ্যে, গোটা দেশে ১০০ শতাংশ গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন।
কিন্তু, সেই নীতিও কোনও ভাবেই গোটা দেশ জুড়ে এক বিদ্যুৎ মাশুল জারি করার জন্য রূপায়ণ করা হয়নি।
অনির্বান বাবুর দাবি, "এই নীতির সঙ্গে বিদ্যুৎ মাশুলের কোনও সম্পর্ক নেই। "
সুতারং, বলা যেতেই পারে, বিজেপি ওয়েস্ট বেঙ্গল ফেসবুকে করা এই পোস্টটি বিভ্রান্তিকর।
JHOOTH BOLE KAUVA KAATE
The number of crows determines the intensity of the lie.
- 1 Crow: Half True
- 2 Crows: Mostly lies
- 3 Crows: Absolutely false