একই সঙ্গে স্বাধীন হয়েছিল দুই দেশ, পাকিস্তান কী ভাবে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর হয়ে উঠল

সিরিয়ার চেয়ে তিন গুণ বিপজ্জনক পাকিস্তান, রিপোর্ট অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের

 |  7-minute read |   30-10-2018
  • Total Shares

স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার সাত দশক পরও বিশ্বজুড়ে পাকিস্তানের পরিচয় অন্যতম সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র হিসেবে। কেউ কেউ আবার পাকিস্তানকে ব্যর্থ রাষ্ট্রের প্রতীক আখ্যাও দিয়ে থাকেন। সম্প্রতি ‘হিউম্যানিটি অ্যাট রিস্ক- গ্লোবাল টেরর থ্রেট ইনডিক্যান্ট (জিটিটিআই)’-এর প্রকশিত একটি রিপোর্ট দাবি করেছে, দুনিয়াজুড়ে সন্ত্রাসবাদী গড়ার কাজে সিরিয়াকে টেক্কা দিচ্ছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের মাটি সন্ত্রাসবাদের আঁতুড়ঘর এবং তাকে ঝড়ের গতিতে বাড়তে দিয়ে বিশ্বমানবতাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে সিরিয়ার থেকে তিনগুণ এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান।

lahore-attack-2007-a_103018043417.jpg২০০৯ সালে পাকিস্তানে আত্মঘাতী হামলা (ফাইল ছবি: এএফপি)

এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও স্ট্র‍্যাটেজিক ফোরসাইট গ্র‌ুপ। জিটিটিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, আফগানিস্তানের তালিবান এবং লস্কর-ই-তৈবার মতো সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় হুমকি। সেই তালিকার শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানে তৈরি হওয়া সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি।

ওই রিপোর্টে লেখা হয়েছে, “ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক জঙ্গি সংগঠনগুলির তথ্য ও পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে,  প্রায় সবক’টি সন্ত্রাবাদী সংগঠনের ঘাঁটি হল পাকিস্তানে। এছাড়া, বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের ঘাঁটি রয়েছে আফগানিস্তানে। ওই সংগঠনগুলি আবার পাকিস্তান থেকে বিভিন্ন সাহায্য পেয়ে থাকে।” এই সব সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের ক্রমাগত বাড়বৃদ্ধি, মানবঘাতী অস্ত্রের অপব্যবহার এবং অর্থনৈতিক ভাঙন যে কেবলমাত্র  মানবসভ্যতার অগ্রগতির পথ রুদ্ধ করবে তা তো নয়, মানবসভ্যতা বহুবিধ সঙ্কটের মুখে পড়বে। কারণ রিপোর্ট অনুযায়ী এই প্রত্যেকটি বিষয়ই কোনও না কোনও ভাবে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত।

পাকিস্তান কেন বেহাল

স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরেও কেন এই অবস্থায় রয়ে গিয়েছে পাকিস্তান? ভারত  পাকিস্তান একই সঙ্গে স্বাধীন হয় (যদিও ভারতের একদিন আগে স্বাধীনতা দিবস পালন করে পাকিস্তান)। অর্থনৈতিক দিক থেকে ভারত এখন বিশ্বে পঞ্চম স্থানে। সেখানে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ দেশের তালিকায় পাকিস্তানকে খুঁজেই পাওয়া যায় না।

স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে সত্তর বছর পেরিয়া আসা একটি রাষ্ট্রের এই অবস্থা কেন? কারণ স্বাধীন হওয়ার পরে ভারত বেশ জোর কদমেই গণতন্ত্রের পথে হাঁটতে শুরু করে। যে পথে হাঁটেনি পাকিস্তান। ১৯৪৭-এ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫২ সালেই সাধারণ নির্বাচন হয় ভারতে এবং নতুন সরকার গঠিত হয়। অন্যদিকে পাকিস্তান স্বাধীনতার ২৩ বছর পর ১৯৭০ সালে প্রথম সাধারণ নির্বাচনের মুখ দেখে।

একটি স্বাধীন রাষ্ট্র এই দীর্ঘ সময় গণতন্ত্রের পথে না হাঁটলেও পাকিস্তানে রাষ্ট্রক্ষমতার হাতবদল হয়েছে, আর তা হয়েছে কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি ছাড়াই। রাষ্ট্রচালনায় জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে অযথা দেরি হওয়ায় পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতায় নাক গলানোর সুযোগ পেয়ে যায় সেনাবাহিনী।

mosarof-reuters_103018043635.jpgপারফেজ মুশারফের মতো অনেক সেনাপ্রধানই পাকিস্তানে সেনাশাসন জারি করেছেন (ফাইল ছবি: রয়টার্স)

একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতায় সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ মানে সব দিক থেকেই সেই রাষ্ট্রের ব্যর্থতা। পাকিস্তানের ক্ষেত্রে এর অন্যতম কারণ হল, এটি কোনও আদর্শভিত্তিক রাষ্ট্র নয়। যে কোনও দেশ, প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তির সাফল্যেও নীতি বা আদর্শ হল জরুরি। যেটা পাকিস্তানে নেই বললেই চলে।   

পাকিস্তানের রাষ্ট্রচরিত্র ক

বলা হয় ইসলামের ওপর ভিত্তি করেই পাকিস্তানের জন্ম। যদি তাই হয়, তবুও কিন্তু পাকিস্তানের অধিকাংশ কর্মকাণ্ডই ইসলাম-পরিপন্থী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতানুসারে এ কথাও বলা যায় যে,  প্রতারণা-প্রবঞ্চনার মাধ্যমেই জন্ম হয়েছে দেশটির। পাকিস্তান গণতান্ত্রিক নাকি একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্র,  তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। কারণ পাকিস্তানে যখন যিনি ক্ষমতায় বসেছেন, তিনি তার খেয়ালখুশি মতো রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন।

পাকিস্তানে জাতিগত দমন-পীড়নও রয়েছে ভীষণ ভাবে। যেটাকে বিশেষজ্ঞরা রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানের ব্যর্থতার বড় কারণ বলে মনে করেন। স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই দেশটির শাসকবর্গ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের উপর বৈষম্যমূলক আচরণ করতে শুরু করে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেদের শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।

অন্যদিকে পাকিস্তান একের পর এক ব্যর্থতার রেকর্ড গড়ে চলেছে। পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি অঞ্চলের জনগোষ্ঠী এখনও বিভিন্ন ভাবে বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হচ্ছে। এমনকি দেশটির মহিলারাও প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে বঞ্চনার শিকার। মহিলাদের পিছিয়ে রেখে কোনও দেশই আজ পর্যন্ত সফল হতে পারেনি।

সামরিক বাহিনীর প্রভাব

সামরিক শাসন পাকিস্তানের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ। স্বাধীনতার পর থেকে বেশিরভাগ সময়ই পাক সেনাবাহিনী দেশটির নেতৃত্বে ছিল। এ কথা তো ঠিকই, দেশটির কোনও সরকারই সেনাবাহিনীর ইচ্ছা ছাড়া যেমন ক্ষমতায় আসতে পারেনি, তেমনই পাকিস্তানের শাসননীতিতে সেনবাহিনীর মতই শেষকথা। তাছাড়া পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত কোনও নির্বাচিত সরকারই তাঁদের মেয়াদ শেষ করতে পারেনি। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই বিভিন্ন কারণে তাদের ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছে। 

millitia-afp_103018044045.jpegপাকিস্তানে জঙ্গিরাজ বেড়েই চলেছে (উপস্থাপনামূলক ছবি: এএফপি)

সম্প্রতি সে দেশের প্রাক্তন ক্রিকেটার ও পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফের প্রধান ইমরান খান দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। তার আগে নওয়াজ শরিফ ও তাঁর দল যখন শাসন ক্ষমতায় ছিল তাঁদের মতো দেশ চালিয়েছে। আবার দুর্নীতিবাজ বলে বিশ্বব্যাপী পরিচিত ভুট্টো পরিবার যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন একভাবে পাকিস্তান চলেছে। এবার নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইমরান খান কী ভাবে দেশ চালান সেটাও দেখার বিষয়। তবে এরই মধ্যে ইমরানের বিরুদ্ধেও নানা কথা শোনা যাচ্ছে। পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর হাতে বর্গা দেওয়ার মুচলেকা দিয়েই ইমরান ক্ষমতায় এসেছেন বলেও প্রচার আছে। এমন একজন ব্যক্তি রাষ্ট্রনেতা হিসেবে পাকিস্তানকে কতটা নিজস্ব বুদ্ধি বিবেচনায় শাসন করতে পারে সেটাই এখন দেখার বিষয়। 

সরকারের স্থায়িত্ব ও স্থিতিশীলতা নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি পাকিস্তানের সরকারি ব্যবস্থাকে সব সময়ই দুর্বল করে রেখেছে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে সামরিক ব্যবস্থার টানাপড়েন সরকারি ব্যবস্থাকে সব সময়ই নানা ধরনের সমস্যায় ফেলে দেয়। যার ফলে দেশ হিসেবে পাকিস্তান ও সে দেশের শাসনব্যবস্থার গণতান্ত্রিক কাঠামোটাই হয়ে যায় ভীষণরকম গোলমেলে। অর্থাৎ চরম অব্যবস্থা বা শাসন ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা পাকিস্তান রাষ্ট্রে চিরস্থায়ী। রাষ্ট্রের এই অব্যবস্থাপনার কারণে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সাধারণ মানুষ। এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়েছে জঙ্গি বা সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি।  

পাকিস্তান রাষ্ট্র যে কেবল অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার অভাবে দুর্বল কিংবা অশক্ত তা তো নয়, পাশাপাশি প্রতিবেশী এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগসূত্রের নেতিবাচকতাও তো একরকম প্রভাবক হিসেবে কাজ করে থাকে। যেমন পাকিস্তানের অনেক বিদ্রোহী দল সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রম প্রতিরোধের জন্য আমেরিকার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখে। এ ছাড়াও সরকারি ব্যবস্থা সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর প্রভাব ফেলে।

সামরিক সরকার কয়েক দশক পাকিস্তান শাসন করায় গণতান্ত্রিক সরকারের সঙ্গে সামরিক বাহিনীর একটা দূরত্ব যেমন থেকেই যায় অন্যদিকে সামরিক ব্যবস্থার সঙ্গে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মেলবন্ধন হওয়াটাও কিছুতেই সম্ভবপর হয় না।

জঙ্গিগোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষক

ব্রিটিশ-ভারতে মুসলমানদের পৃথক রাষ্ট্র পাকিস্তানের জন্য দাবি তুলেছিল মুসলমানদের প্রতিনিধিত্বকারী দল মুসলিম লিগ। হিসাব মতো ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতার আগের দিন জন্ম নিয়েছিল এই পাকিস্তান। কিন্তু ‘মুসলমানদের রাষ্ট্র’ বলতে কী বোঝায়? পাকিস্তানের নাগরিকদের সে ধারণা কি রাজনৈতিক নেতারা আজ পর্যন্ত দিতে পেরেছেন?

সোজা কথা নয়। গণতান্ত্রিক রীতি অনুযায়ী গণমানুষের ইচ্ছার কোনও প্রতিফলন কি পাকিস্তানে আজ পর্যন্ত ঘটেছে? স্পষ্ট উত্তর – না।

তাহলে? ষড়যন্ত্র, ধর্মান্ধতা পাশাপাশি অভিজাত শ্রেণির একাধিপত্য সবমিলিয়ে রক্তপাত এই রাষ্ট্রের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণের রাষ্ট্র না হয়ে গত সাত দশকে পাকিস্তানের পরিচয় জঙ্গিদের অভয়ারণ্য হিসেবে। শাসকগোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক জঙ্গি গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতা করতে গিয়ে গোটা দেশটাকেই ফেলে দিয়েছে সন্ত্রাসবাদী ঝুঁকিতে। কেবল আড়ে-বহরে কিম্বা সংখ্যায় নয় শক্তি ও ক্ষমতায় বেড়ে জঙ্গিরা এখন পাকিস্তানের শাসক আর সেনাবাহিনীকে ফেলে দিয়েছে মুখোমুখি চ্যালেঞ্জে।

জঙ্গি কংবা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি যে কখন রাষ্ট্রব্যবস্থার কোনটির উপর হামলা করে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই দেশটিতে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে একান্ত বাধ্য না হলে অন্য কোনও দেশ থেকে পাকিস্তানে যেতে চায় না মানুষ। হামলার আশঙ্কায় বহু দেশ সেখানে খেলত পর্যন্ত যেতে চায় না।

hafeez-sayeed-reuter_103018044151.jpgহাফিজ সৈয়দের মতো জঙ্গিদের ভরণপোষণ করে পাকিস্তান (ফাইল ছবি: রয়টার্স)

পাকিস্তানে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে সব সময়েই। আজ নয় তো কাল হামলা ঘটেই চলেছে। হামলা হয়েছে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের ওপর, শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তাদের উপর, সেনাবাহিনীর অবস্থান বা ঘাঁটিতে, হাট বাজারে, খেলার মাঠে এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও। গুলি করে বোমা মেরে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিয়েছে জঙ্গিরা। জঙ্গি হিংস্রতা, নৃশংসতা বিশ্বজুড়ে তীব্র ভাষায় নিন্দিত হওয়া স্বত্বেও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই ওই সব জঙ্গি সংগঠনগুলির।

পেশোয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিত স্কুলে হামলা চালিয়ে ব্রাশফায়ার করে ১৩২ শিশুসহ ১৪১ জনকে হত্যার ঘটনায় স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল গোটা বিশ্ব। বিশ্ববাসীর তীব্র নিন্দা আর ঘৃণা প্রকাশের পর অনুশোচনার বদলে তালেবান জঙ্গিরা স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছিল এ ধরনের হামলা আরও হবে বরং পরেরগুলো হবে আরও হৃদয়বিদারক। অর্থাৎ রক্তঝরা পাকিস্তানে রক্তের বন্যা অব্যাহতই রাখতে চায় জঙ্গি সংগঠনগুলি।

দায়ী রাষ্ট্র ও প্রশানিক দুর্বলতা

এই ভাবে চলতে চলতে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রটি জঙ্গিদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। তাহলে কি পাকিস্তান রাষ্ট্রটি দিন দিন জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে? এমন প্রশ্ন ইতিমধ্যে উঠেছে একাধিকবার। অথচ এক একটি হামলার পরই সন্ত্রাসের শিকড় উপড়ে ফেলার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার ঘোষণা হয়।

pak-pm-reuters_103018044318.jpgইমরান খান: মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায়? (ফাইল ছবি: রয়টার্স)

কিন্তু কোথাও কি কোনও প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে? বরং পাকিস্তানে সাম্প্রাদায়িক দ্বন্দ্ব, গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব এবং রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে হিংসা মাত্রা ও তীব্রতা আগের তুলনায় আরও জোরালো হচ্ছে এবং আক্রমনের ফলে হতাহতের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাকিস্তানে বহু জঙ্গি সংগঠন আছে যারা যে কোনও মূল্যে রাষ্ট্র ক্ষমতার ভাগীদার হতে চায়। আর সেটাই পাকিস্তানের শাসনতন্ত্রকে আরও জটিল করে দিয়েছে।

এই অবস্থার দায় পাকিস্তান প্রশাসনের তথা বিভিন্ন সময় পাকিস্তানে যারা সরকার চালিয়েছে তাদের। দেশটির অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার রাজনীতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রাজনীতির কারণেও ধর্মীয় জঙ্গিদের নির্মূলের সম্ভাবনায় একটা বড় প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে।

পাকিস্তানের সামাজিক ও ধর্মীয় বাস্তবতাও জঙ্গি সংগঠনগুলিকে নির্মূল করার সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে না। এখনও ওই জঙ্গি সংগঠনগুলি দেশের রাজনৈতিক দল ও সেনাবাহিনীর নৈতিক সমর্থন যেমন পায় তেমনই পায় অর্থসহ অন্যান্য সাহায্যও।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

TAPAN MALLICK CHOWDHURY TAPAN MALLICK CHOWDHURY

The writer is a journalist.

Comment