এবার নিট-ইউজি ২০১৮ উত্তীর্ণদের রাজ্য মেধাতালিকা প্রকাশ করার দাবিতে সরব মেডিক্যাল পড়ুয়ারা
ডোমিসাইল নীতির রদবদল করতে হবে এবং যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ করে দিতে হবে
- Total Shares
ট্রেনি রিজার্ভ নিয়ে অবশেষে জট কাটলেও এখনও ধোঁয়াশায় এ বছরের নিট-ইউজি উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষৎ। কারণ গত বছরের মতো এবছরেও রাজ্য সরকার রাজ্য মেধাতালিকা (state merit list) প্রকাশ না করেই, সর্বভারতীয় রেঙ্কের (All India Rank) ভিত্তিতেই সব ছাত্রছাত্রীকে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ ২০০০ টাকা করে জমা করতে নির্দেশ দিয়েছে।
গতবছরের এভাবেই ছাত্রছাত্রীদের থেকে টাকা আদায় করা হয়েছিল। কিন্তু তখন তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হলেও সরকার তা গ্রাহ্য করেনি। গতবার পড়ুয়ারা টাকা জমা দিতে বাধ্য হয়েছিল কারণ তা না হলে স্বাভাবিকভাবেই তারা ভেরিফিকেশনে হাজির থাকতে পারত না।
রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে ৮৫ শতাংশ আসনে এমবিবিএস ও বিডিএস-র ভর্তির জন্য আগে জয়েন্ট প্রবেশিকা পরীক্ষার নেওয়া হতো ও একটি জাতীয় প্রবেশিকার (এ আই পি এম টি) মাধ্যমে দেশের অবশিষ্ট ১৫ শতাংশ আসনে বিভিন্ন মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি নেওয়া হতো।
রাজ্য মেধাতালিকা প্রকাশ করা না হলে রাজ্য ভিত্তিক কাউন্সিলিং করা সম্ভব নয়
কিন্তু জয়েন্ট পরীক্ষা বাতিল হয়ে যাওয়ার পরে নিট চালু হলে নিয়মেরও রদবদল ঘটল। শুরু হল দুটি মেধাতালিকা প্রকাশ করা। একটি জাতীয় মেধাতালিকা অন্যটি রাজ্য মেধাতালিকা।
রাজ্য মেধাতালিকা প্রকাশ করা না হলে রাজ্য ভিত্তিক কাউন্সিলিং করা সম্ভব নয়।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ এবছর মেধাতালিকা প্রকাশ করার আগেই জানিয়ে দিয়েছে যে জাতীয় মেধাতালিকায় যতজনের নাম আছে তাদের সকলকে ২০০০ টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন ও ডোমিসাইল ভেরিফিকেশন করাতে হবে। এর ফলে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একটা ক্ষোভ দানা বেঁধেছে ও চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্য মেধাতালিকা না থাকার ফলে ছাত্রছাত্রীরা বুঝতে পারছে না যে রাজ্য তালিকায় তাদের স্থানটা ঠিক কোথায় কিংবা এবারে আদৌ কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে কী না?
স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা ডা. দেবাশীষ ভট্টাচার্য্যর কাছে ডেপুটেশন জমা দেওয়া হচ্ছে
তাই স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে আমাদের দাবি যে ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া শুরুর আগেই অবিলম্বে রাজ্য ভিত্তিক মেধাতাহিলা প্রকাশ করা হোক। দেশ জুড়ে কাউন্সিলিং খুব দ্রুত শুরু হতে চলেছে আর সেই কাউন্সিলিং-টি শেষ হতে না হতেই শুরু হয়ে যাবে রাজ্যের কাউন্সিলিং। তাই সময় হাতে আর নেই বললেই চলে।
স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা ডা. দেবাশীষ ভট্টাচার্য্যর কাছে এই নিয়ে আমরা ডেপুটেশনও জমা দিয়েছি। তিনি আমাদের দাবীর যৌক্তিকতা স্বীকার করেন ও উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দেন।
আমরা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছেও যাই। তিনি স্বীকার করেছেন যে এটা ঠিক হচ্ছে না এবং তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও করবেন। তারপর অবশ্য এ বিষয় তেমন আর কোনও কথা গোড়ায় নি।
বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে বাইরের রাজ্যএরাজ্যের মেডিকেল-ডেন্টাল আসন দখল করে
এছাড়া আমরা বলেছি যে বসবাস সম্পর্কিত সরকারি কাগজ বা ডোমিসাইল নীতিটি রদবদল করতে হবে এবং যোগ্য প্রার্থীদের সুযোগ করে দিতে হবে। রাজ্যের ভ্রান্ত ডমিসাইল নীতির কারণে প্রতিবছর বহু যোগ্য ছাত্রছাত্রী বঞ্চিত হয়। এবং বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে বাইরের রাজ্য থেকে এ রাজ্যের মেডিক্যাল ও ডেন্টাল আসন দখল করে।
সারা দেশ জুড়ে এবছর ১২,৬৭,২২৯ লক্ষ ছাত্রছাত্রী এই পরীক্ষা দিয়েছিল।

